January 20, 2025
আঞ্চলিকলেটেস্টশিক্ষাশীর্ষ সংবাদ

খুলনায় স্বপ্নপুরী স্কুলে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের দিনব্যাপী মিলনমেলা

দ. প্রতিবেদক
দশ বছরের ছোট্ট মেয়ে সাথী (ছদ্মনাম)। বাবা প্রতিবন্ধী। মা অন্যের বাসায় কাজ করে সাথীকে নিজের কাছে রাখতে পারলেও ওর স্কুলে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারেনি তিনি। হাসনা (ছদ্মনাম) জন্মের পর থেকে ই বাবাকে দেখতে পায়নি। মায়ের অভাব অনটন থেকে ই তিনি সংসারের দায়িত্ব নেন মাত্র নয় বছর বয়সে।
সাথী ও হাসনার মতো অর্ধশতাধিক সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে প্রথমবারের মতো আনন্দ উৎসবের আয়োজন করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্বপ্নপুরী’। আজ সোমবার ‘স্বপ্নপুরী আনন্দ উৎসব-২০২০’ শীর্ষক এই আয়োজন করা হয়। এ আনন্দ উৎসবে শিশুদের জন্য নানা ধরনের খেলাধুলা ও নাচ-গানের আয়োজন করা হয়।
খুলনা রেলওয়ে এলাকায় দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও স্বপ্নপুরী স্কুলের প্রধান শিক্ষক তামান্না ইয়াসমিন মুন্নি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে জুম অ্যাপে উপস্থিত ছিলেন রোটারিয়ান বনানী দাস। বিশেষ অতিথি হিসেবে জুম অ্যাপে ছিলেন স্বপ্নপুরীর প্রতিষ্ঠাতা এম সাইফুল ইসলাম। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন নারী নেত্রী ইশরাত আরা হীরা, লায়লা রূপালী লাইফ ইনসুরেন্স এর রিজিওনাল অফিসার মোঃ ইসমাইল হোসেন আলমগীর।
স্বপ্নপুরী স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা এম সাইফুল ইসলাম বলেন, খুলনা রেললাইনে আড্ডা দিতে গিয়ে দেখতাম অনেক শিশুরা ফুল বিক্রি করছে, পানি বিক্রি করছে। এগুলো দেখে ভাবতাম, আমরা তো অনেক সুখেই আছি। অথচ আমাদের আশেপাশেই রয়েছে অসংখ্য সুবিধাবঞ্চিত শিশু। এসব শিশুদের জন্য কিছু করতে হবে। এমন ভাবনা থেকেই আমাদের সংগঠনটির জন্ম।
তিনি আরও জানান, প্রথমে আমি একা শুরু করলেও কয়েকদিনের মধ্যেই আমার সহযোগী হিসেবে এগিয়ে আসে আরও পাঁচ জন। ছয় জন মিলে শুরু করা এ সংগঠনটিকে দাঁড় করানোর চেষ্টা এখনও চলছে। শিশুদের জন্য স্বাস্থ্য সেবারও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা প্রতিটি শিশুর জন্য সবুজ একটি দেশ রেখে যেতে চাই। স্কুলে পড়ানো হয় বাংলা, ইংরেজি ও গণিত। একই সাথে তাদেরসহ শিক্ষা কার্যক্রম এ যেমন গান, আবৃতি, অভিনয়ে ও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। সুবিধাবঞ্চিত অসংখ্য শিশুদের স্বপ্ন দেখাতে চায় এ সংগঠনের প্রতিটি সদস্য। শিক্ষা ছাড়া দেশকে বদলে দেওয়া অসম্ভব। এজন্য শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে। একটি শিশুও যেন শিক্ষা অভাবে না ভোগে। এমনই স্বপ্ন নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে স্বপ্নপুরী।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের নভেম্বরে যাত্রা শুরু হয়। ছিন্নমূল ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য এ সংগঠনটি গড়ে তুলি। শুরুতে শিক্ষার্থী সংখ্যা ছিল ১৫ জন। আস্তে আস্তে বেড়ে এখন তা শতকের কাছাকাছি। বেড়েছে স্কুল ও সংগঠনের কার্যক্রম। শিক্ষা অফিসের সহযোগিতায় পড়াশোনার জন্য বই-খাতারও ব্যবস্থা করেছে তারা।

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *