খুলনায় ব্যবসায়ী সাকের হত্যার রহস্য দু’মাসেও উদঘাটন হয়নি
কয়েক কোটি টাকা আত্মসাতের জন্য হত্যা : দাবি স্ত্রীর
দ. প্রতিবেদক
খুলনা মহনগরীর আহসান আহমেদ রোডের বাসিন্দা ব্যবসায়ী মোঃ হোসেন সাকের (৫৫) হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনে ধীরগতিতে এগোচ্ছে পুলিশ। ইতোমধ্যে এ মামলার এজাহারভুক্ত ৭ আসামী গ্রেফতার হয়ে জেলহাজতে রয়েছেন। এজাহারভুক্ত আসামীদের মধ্যে ৪ জনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে পুলিশ। তবে এখনো পর্যন্ত হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ।
ব্যবসায়ী সাকের’র কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে পরিবারের সদস্যরা দাবি করছেন। ইতোমধ্যে মামলার পুর্বের তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার ওসি (তদন্ত) দেবাশিষ রায়ের স্থলে অফিসার ইনচার্জ আশরাফুল আলম তদন্তভার নিয়েছেন।
এদিকে দু’দফায় জামিন আবেদন করলেও আসামীদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছে আদালত। সর্বশেষ গত ১ সেপ্টেম্বর ৩ আসামীর জামিন নামঞ্জুর করেছেন মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোঃ শহিদুল ইসলাম।
মামলার এজাহারভুক্ত আসামীরা হলেন- নগরীর ৪৬/১ আহসান আহমেদ রোডের মৃত. ডা. আলতাফ হোসেনের ছেলে নিহত সাকেরের বড় ভাই হাবিব হোসেন শাহিন (৬০), তার স্ত্রী হাসিনা হাবিব হোসেন গ্লোরিয়া (৫৫), পালিত ছেলে লামীম হোসেন (২১), আব্দুল হামিদের ছেলে সাইফুল ইসলাম (২১), হাজী ইসমাইল রোডস্থ পাইকপাড়ার মৃত. আব্দুল জব্বার শিকদারের ছেলে কেয়াটেকার মোঃ ফরহাদ হোসেন (৪৪), ৫৪/৫৫ টুটপাড়া জোড়াকল বাজারের মৃত. কাজী আব্দুর রবের ছেলে শাহিনের ব্যবসায়ীক পার্টনার কাজী শরিফুল ইসলাম (৫৫) ও বসুপাড়া কবরস্থানের মেইন গেটের সামনের তসলিমের বাড়ির ভাড়াটিয়া তৈয়ব আলি শেখের ছেলে মোঃ সেকেন্দার শেখ (৪৮)।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, নগরীর ৪৬/১ আহসান আহমেদ রোডের বাসিন্দা মৃত. ডা. আলতাফ হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ হোসেন সাকের স্ত্রী ও মেয়ে নিয়ে বসবাস করেন। ২২জুন দুপুর আড়াইটার দিকে স্ত্রী সাজিয়া আফরিন হোসেন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে গাজী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে বাড়ি ফিরে আসেন সাকের। ২৩ জুন সকাল ১০টার দিকে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে খুমেকে করোনা পরীক্ষার জন্য যান এবং বিকেলে বাড়ি ফিরে আসেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে মেয়ে জন্য খাবার কিনতে গিয়ে আর বাড়ি ফিরে আসেনি। ২৪ জুন সকালে বাড়ির প্রধান ফটকের ভেতরে ড্রেনের পাশে সাকের (৫৫)’র মৃতদেহ পড়ে থাকা অবস্থায় উদ্ধার করে স্বজনরা। এরপর তারা লাশের ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন সম্পন্ন করেন। মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হলে ২৬ জুন তার স্ত্রী স্বামীর মৃত্যুর কারণ জানতে কবর থেকে লাশ উত্তোলন ও ময়নাতদন্তের আবেদন করেন। একই সাথে সদর থানায় একটি জিডি করেন নিহতের স্ত্রী সাজিয়া আফরিন হোসেন। এ ঘটনায় পুলিশ শনিবার ২৭ জুন রাত সাড়ে ১২টা থেকে ভোর সোয়া ৫টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ৭ জনকে গ্রেফতার করে। ২৮ জুন এ ঘটনায় সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয় যার নং-১৮।
মামলার বাদী নিহত ব্যবসায়ী মোঃ হোসেন সাকেরের স্ত্রী সাজিয়া আফরিন হোসেন জানান, তার স্বামীর প্রায় ১০/১২ কোটি টাকা মূল্যের পৈত্রিক সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য আসামীরা পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করেছে।
এ বিষয়ে মামলার বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা ও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশরাফুল আলম জানান, মামলার এজাহারভুক্ত ৭ আসামী জেলহাজতে রয়েছেন। তবে এখনো পর্যন্ত হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি।
দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ