খুলনায় বেসরকারি পর্যায়ে করোনা চিকিৎসার উদ্যোগ
* দুই হাসপাতালকে প্রস্তুত রাখতে সিভিল সার্জনের চিঠি
* করোনা হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ ব্লাড ব্যংকের
জয়নাল ফরাজী…
খুলনায় এবার বেসরকারি পর্যায়ে করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্তদের চিকিৎসার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এমতাবস্থায় নগরীর দুইটি বেসরকারি হাসপাতালকে প্রস্তুত থাকতে চিঠি দিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ। এছাড়া খুলনা ব্লাড ব্যাংকের উদ্যোগে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট করোনা হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, খুলনা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে রোগীর ভয়াবহ চাপ বেড়েছে। ১০০ শয্যার হাসপাতালে স্থান সংকুলান না হওয়ায় ১১ জন করোনা রোগীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফ্লু কর্নারে রাখা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে বেসরকারি হাসপাতালে রোগী ভর্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
খুলনা সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে জানান, করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য খুলনার বেসরকারি গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫০টি ও ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ৩০টি শয্যা প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে সমন্বয় করেই সেখানে চিকিৎসা দেওয়া হবে। আগামী রবিবার (৫ জুলাই) থেকে সেখানে করোনা রোগী ভর্তি করা হতে পারে।
এদিকে খুুলনায় প্রথম ‘করোনা হাসপাতাল’র উদ্যোগ নিয়েছে খুলনা ব্লাড ব্যাংক। বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার তিন ধাপে খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জিয়াউর রহমান, কেএমপি’র বিশেষ পুলিশ সুপার রাশিদা বেগম এর সাথে সার্বিক আলোচনা করেছেন সংগঠনটির সদস্যরা।
খুলনা ব্লাড ব্যাংকের কোষাধ্যক্ষ মো. আসাদ শেখ দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে জানান, করোনায় আক্রান্ত রোগী দিন দিন বাড়ার কারণে কিছু মানবিক ব্যক্তির আর্থিক সহযোগিতায় এবং খুলনা ব্লাড ব্যাংক ও খুলনা ফুড ব্যাংকের পরিচালনায় সর্বপ্রথম ১০০ শয্যাবিশিষ্ট বিশেষ হাসপাতাল গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। যেখানে থাকবে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাই সিস্টেম ও হাই ফ্লো নাসাল ক্যানোলা সিস্টেম, যা এখনও খুলনাতে শুরু হয়নি। এছাড়াও এক্সরে মেশিন, আইসিইউ, ঔষধসহ করোনা রোগীদের চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় সবকিছুই সেখানে রাখা হবে।
তিনি আরও বলেন, এটি বাস্তবায়ন করতে সকলের সার্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন। অনেকেই আমাদের সাথে আছেন। সবার সহযোগিতা পেলে আমরা এগিয়ে যাবো।
এর আগে গত শনিবার গাজী মেডিকেল কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. গাজী মিজানুর রহমান দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে জানান, এ অঞ্চলের করোনা রোগীদের সেবায় গামেক হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিট, ফ্লু-কর্নার ও আরটি-পিসিআর ল্যাব সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট করোনা ইউনিটে থাকছে পরিপূর্ণ অক্সিজেন ব্যবস্থা। এই ইউনিটে আপাতত দুইটি ভেন্টিলেটর সুবিধা থাকবে। বেসরকারি পর্যায়ে এই প্রথম খুলনাতে ভেন্টিলেটর সুবিধা থাকছে। তিনি জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদনও চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এবং সব কিছু ঠিক থাকলে এ মাসের ১০ তারিখ চালু হবে পূর্ণাঙ্গ করোনা আইসোলিশন ইউনিট।
তিনি আরও জানান, করোনা আইসোলেশন ইউনিট, পিসিআর ল্যাব ও ফ্লুওপিডি কর্নার চালু হবে। যেটি হাসপাতালের অন্যান্য অংশ থেকে একেবারে আলাদা থাকবে, ফলে হাসপাতালের অন্যান্য রোগীদের জন্য সকল চিকিৎসা সেবা নিরাপদ ও অব্যাহত থাকবে। এখানে করোনা পরীক্ষা করাতে সরকার নির্ধারিত ফি (৪৫০০ টাকা) নেয়া হবে এবং দ্রুত পরীক্ষার ফলাফল জানা যাবে।