November 27, 2024
আঞ্চলিকলেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

খুলনায় দুই বোনের মানবিক কর্মকাণ্ডে প্রশংসিত ছাত্রলীগ

এফ এম হাফিজুল ইসলাম
কখনও ছোট ছেলেমেয়েদের মাস্ক পরতে উৎসাহী করতে চকলেট, বেলুন ও ফুল নিয়ে হাজির, কখনও অসহায় পথচারী-ছিন্নমূলদের আহার যোগাতে রান্না করা খাবার বিতরণ, পথচারী রোজাদারদের মাঝে ইফতার বিতরণ কিংবা গ্রামের কৃষাণীদের ধান মাড়াই কাজে অংশ নেওয়া, কি গুণ নেই তাদের মাঝে। বলছিলাম খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার গুটুদিয়া ইউনিয়নের দুই বোন শেখ প্রিয়া ও শেখ রিয়ার কথা। যাদের মানবিক কর্মকাণ্ড ও উদ্যোগে আজ প্রশংসিত হচ্ছে খুলনা জেলা ছাত্রলীগ। পদ-পদবী না থাকলেও সংগঠনের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা, ভালবাসা ও দায়িত্ববোধ যেন নতুন করে ভাবাচ্ছে নীতি-নির্ধারকদের।
জানা গেছে, খুলনার রাজপথে জেলা ছাত্রলীগের মিছিল, মিটিং, সমাবেশে যে কয়েকজন ছাত্রী দেখা যায়- তাদের মধ্যে শেখ প্রিয়া ও শেখ রিয়া অন্যতম। করোনাকালে তাদের জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম নজর কেড়েছে সবার। বিশেষ করে পাড়া-মহল্লায় উঠান বৈঠক করে নারী ও শিশুদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি। করোনা প্রতিরোধে শিশুদের মাস্ক পরতে উৎসাহিত করতে বেলুন-চকলেট বিতরণ, রমজান মাসে দরিদ্র ও অসহায় রোজাদারদের মাঝে ইফতার বিতরণ, মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে বৃক্ষরোপণ, গ্রামের অসহায় কৃষাণীদের ধান-মাড়াই কাজে সহায়তা, ভবঘুরে মানুষদের মাস্ক ও রান্না করা খাবার বিতরণ তাদের মানবিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। এছাড়া যেখানে একজন বিকলাঙ্গ শিশুর কাছে যেতে অনেকের অনীহা; নির্দ্বিধায় তারা দুই বোন খাবার নিয়ে হাজির। পরে নিজ হাতে খাবার খাইয়ে দেন সেই শিশুকে। যা প্রশংসিত হচ্ছে সর্বক্ষেত্রে। এছাড়াও তাদের কর্মকাণ্ডের মধ্যে রয়েছে ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া রোগে সংক্রমণ রোধে গুটুদিয়া ইউনিয়নে পরিত্যক্ত ঝোপ-ঝাড় পরিষ্কার করে এবং জীবাণুনাশক স্প্রে ছিটানো।
আরও জানা গেছে, প্রিয়া ও রিয়া মানবিক কর্মকাণ্ড ছাড়াও জেলা, উপজেলা ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে কর্মী সহকারে অংশগ্রহণ করে আসছেন। পদে না থাকলেও মিছিল-মিটিংয়ে মেয়েদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে তাদের ভূমিকা যথাসাধ্য। এসকল দিক বিবেচনা করে জেলা ছাত্রলীগের আগামী কমিটিতে তাদের স্থান পাওয়া দাবি হয়ে দেখা দিয়েছে।
জেলা ছাত্রলীগের একাধিক সূত্র জানায়, সাধারণত মিছিল-মিটিংসহ অন্যান্য কর্মসূচিতে ছেলেদের পাওয়া গেলেও মেয়েদের উপস্থিতি আশানুরূপ নয়। এক্ষেত্রে যে সকল স্বেচ্ছায় উৎসাহিত হয়ে দলীয় কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করা উচিত। তাহলে এদের দেখে অন্য মেয়েরাও দলের কর্মকাণ্ডে আরও বেশি সক্রিয় হবে বলে সূত্রটি জানায়।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগ কর্মী শেখ প্রিয়া দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে ভালবেসে ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করি। আর মানবসেবা রাজনীতিরই অংশ। মানুষের ভাল করতে পারলে নিজেরও ভাল লাগে, দিনশেষে আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায়। দলের পদ-পদবী পাওয়াটা মুখ্য নয়। ইচ্ছা থাকলেও মানুষের ভাল কিংবা দলের কর্মকাণ্ডে সরব হওয়া যায়।’
ছাত্রলীগ কর্মী শেখ রিয়া দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে বলেন, ‘দলের সব ধরনের কর্মসূচিতেই সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছি। মানবিক কর্মকাণ্ড নিজেদের ভাল লাগা থেকে করি। আশা করি দলের হাই-কমান্ড কমিটি গঠনে যোগ্যতা ও সক্রিয়তা বিবেচনায় আনবেন। তাহলে যোগ্যরা মূল্যায়িত হবে।’
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৯ জুলাই সম্মেলন শেষে সমঝোতার ভিত্তিতে পারভেজ হাওলাদারকে সভাপতি এবং ইমরান হোসাইন ইমুকে সাধারণ সম্পাদক করে খুলনা জেলা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি গঠন করা হয়। যার ৬ মাস পর ২২১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। যে কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীতে ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক ও উপ-সম্পাদক ৪ জন, উপ-স্কুল বিষয়ক সম্পাদক ১ জন মেয়ে।

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ জে এফ জয়

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *