খুলনায় ট্রিপল মার্ডারের ১২ দিনেও অস্ত্র উদ্ধার ও মূল আসামী গ্রেফতার হয়নি
* আসামী আরমান ও জাহাঙ্গীর ফের তিন দিনের রিমান্ডে
* হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন
দ. প্রতিবেদক
খুলনার খানজাহান আলী থানাধীন মশিয়ালী এলাকায় ট্রিপল মার্ডার ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত শেখ জাকারিয়া-মিল্টন সহোদর ও তাদের সহযোগিদের এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ঘটনার ১২ দিন অতিবাহিত হলেও উদ্ধার হয়নি ট্রিপল মার্ডারে ব্যবহৃত অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র। এ ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে ওই এলাকার মানুষ।
আজ সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নিহত শ্রমিক নজরুল ইসলাম, দিনমুজুর গোলাম রসুল ও কলেজ ছাত্র সাইফুল শেখের হত্যাকারীদের দ্রুত খুঁজে বের করে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে খুলনা-যশোর মহাসড়কের ইষ্টার্ণ জুট মিলের সামনে মানববন্ধন করেছে গ্রামবাসী।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মশিয়ালী গ্রামের নির্মম এ হত্যাকান্ডের ঘটনার ১২ দিন অতিবাহিত হলেও মূল আসামী শেখ জাকারিয়া ও মিলটনকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। অবিলম্বে তাদেরকে গ্রেফতার করে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করুন, অন্যত্থায় গ্রামবাসী এখনো অনিরাপদ। এছাড়া ঈদুল আযহার আগের দিন পর্যন্ত প্রতিদিন বিকাল ৫টায় হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মশিয়ালি মাদ্রাসার সামনে থেকে এলাকাবাসীর উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে যদি ঘাতকরা আটক না হয় তাহলে পরবর্তীতে কঠিন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন নেতৃবৃন্দ।
নগরীর ৩৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হামিদ সরদারের সভাপতিত্বে ও মোঃ রেজওয়ান রাজার পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন মহানগর আ’লীগের সাবেক সহ-সভাপতি বেগ লিয়াকত আলী, খানজাহান আলী থানা আ’লীগের সভাপতি শেখ আবিদ হোসেন, আটরা-গিলাতলা ইউপি চেয়ারম্যান শেখ মনিরুল ইসলাম, কাজী আজাদুর রহমান হিরক, আঃ সাত্তার মোল্যা, ইউপি সদস্য মোঃ বখতিয়ার , হুমায়ুন কবির, শেখ তরিকুল ইসলাম, শেখ শাহিনুর রহমান, আব্দুর রব মোল্যা, তবিবুর রহমান, সালাম গাজী, ইউসুফ গাজী, ইমদাদুল মোল্যা, মনিরুল ইসলাম ছোট্ট, আমিরুল ইসলাম সরদার, মীর আব্দুর রউফ, হাফেজ মাওলানা মাসুম বিল্লাহ ও মুন্সি শামীম প্রমুখ।
এদিকে মশিয়ালী হত্যা মামলার আসামী আরমান ও জাহাঙ্গীরকে ফের তিনদিনের রিমান্ডে নিয়েছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। সোমবার মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ৫ দিনের রিমান্ড শুনানি শেষে তিন দিনের জন্য মঞ্জুর করা হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা নগর গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক মোঃ এনামুল হক বলেন, গ্রেফতারকৃত আরমান ও জাহাঙ্গীরকে জিজ্ঞাসাবাদে তিনদিনের রিমান্ডে নেয়া হবে। শেখ জাফরিন হাসানের রিমান্ড শেষ হচ্ছে আজ। পরবর্তীতে তাকেও রিমান্ডের আবেদন করা হতে পারে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও মামলার মূল আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মামলায় এ পর্যন্ত ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত্ব, গত ১৬ জুলাই রাতে ইস্টার্ণগেট এলাকায় গুলিতে তিনজন নিহত হন। পরে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীর গণপিটুনিতে নিহত হন ঘাতকপক্ষের এক যুবক। ট্রিপল হত্যাকান্ডে নিহত সাইফুল ইসলামের পিতা সাইদুল ইসলাম বাদী হয়ে (যার নং-১২, ১৮-৭-২০২০ইং) শেখ জাকারিয়া হোসেন জাকার, তার দুই সহোদর শেখ জাফরিন হাসান ও মিল্টনসহ ২২ জনের নাম উল্লেখসহ ১৫/১৬জন অজ্ঞাতকে আসামী করে মামলা করেন।
বিক্ষুব্ধদের সামনে কেএমপি কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির গত ২৩ জুলাই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ‘হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না’। জড়িতদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে ২৫ জুলাই ৭ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন খুলনা আ’লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। এরইমধ্যে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে নগর গোয়েন্দা পুলিশকে।
দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ