খুলনায় টানা বৃষ্টিপাতে জলাবদ্ধতা সীমাহীন ভোগান্তিতে নগরবাসী
দ: প্রতিবেদক
বৃষ্টি পড়বে আর জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে না তা কি হয়? খুলনায় বৃষ্টি আর জলাবদ্ধতা যেন একে অপরের সাথে জড়িত। আকাশে মেঘ ডাকলেই যেন ডুবে যায় খুলনা নগরীর বিভিন্ন এলাকা। বিশেষ করে নগরীর রয়েল মোড়, বেনী বাবু রোড, আহসান আহমেদ রোড, শান্তিধাম মোড়সহ প্রাণকেন্দ্রগুলো।
ভোর থেকে আকাশ মেঘলা থাকলেও সকাল ৯টার দিকে চারদিক অন্ধকার হয়ে আসে। শুরু হয় বজ্রসহ বৃষ্টি। সঙ্গে পড়েছে শিলও। ফাল্গুনের বৃষ্টি বোরো ধানের জন্য আর্শিবাদ হলেও ঝড় ও শিলাবৃষ্টি হওয়ায় আমের মুকুলের ক্ষতি হয়েছে। শিলার আঘাতে আমের মুকুল গাছের নিচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঘরবাড়ি ও গাছপালা। ঘন্টাখানেক ভারী বর্ষণের পর দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলে হালকা বৃষ্টি। এরপরে দুপুর ১টা থেকে বিকাল পর্যন্ত কখনো ভারী, কখনো হালকা বর্ষণে নগরীর পথঘাটে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতার। বেশ কিছু জায়গায় জলাবদ্ধতা হলেও পরে আবার পানি সরে গেছে। কিন্তু অধিকাংশ জায়গায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। বৃষ্টির পানির সাথে নোংরা পানি এক হয়ে এখন একাকার। ড্রেনের ময়লা-আবর্জনা এখন রাস্তার ওপর পানকৌড়ির মতো ভেসে বেড়াচ্ছে। ফলে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছে নগরবাসী।
একটুখানি বৃষ্টি হলেই যে সকল এলাকার সড়কে পানি জমে দীর্ঘক্ষণ ভোগান্তিতে থাকেন নগরবাসী সেগুলো হচ্ছে- খানজাহান আলী রোড, শের এ বাংলা রোড, রূপসা স্ট্যান্ড রোড, মতিয়াখালী রোড, টুটপাড়া সেন্ট্রাল রোড, বাবুখান রোড, মৌলভীপাড়া রোড, টিবি ক্রস রোড, আহসান আহমেদ রোড, হাজী মহসিন রোড, পিটিআই মোড়, কদমতলা রোড, রূপসা ব্রিজ রোড, ইসলামপাড়া রোড, লবণচরা বান্দা বাজার, দোলখোলা, মিস্ত্রীপাড়া, মিয়াপাড়া, বাগমারা, ইকবালনগর, রায়পাড়া, শামসুর রহমান রোড, শান্তিধাম মোড়, রয়েল মোড়, ইসলামপুর রোড, বাইতিপাড়া রোড, দেবেন বাবু রোড, শেখপাড়া রোড, বসুপাড়া, নিরালা, করিমনগর, বেনী বাবু রোড, ধর্মসভা রোড, জোড়াগেট, নেভীগেট, বিআইডিসি রোড, সোনাডাঙ্গা, ছোট মির্জাপুর, গোবরচাকা রোডসহ আরও অনেক জায়গা।
শান্তিধাম এলাকার মোঃ ইমরান হোসেন জানান, প্রতিবছরই বৃষ্টি হলে শান্তিধাম মোড় এবং রয়েল মোড়ে প্রায় কোমর সমান পানি থাকে। বৃষ্টির পানি সরার আগে আবার বৃষ্টি আসলে দোকানে পানি উঠে যায়। বছরের পর বছর ধরে এ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আমাদেরকে। রাস্তাটি নিচু হওয়ার কারণে জলাবদ্ধতা বেশি সৃষ্টি হয়।
কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনার উপ-পরিচালক কৃষিবিদ পঙ্কজ কান্তি মজুমদার জানান, ফাল্গুনের হালকা শিলাবৃষ্টিতে বোরো ধানের উপকার হবে। কিন্তু আমের মুকুলের সামান্য ক্ষতি হলে হতে পারে।
খুলনা আঞ্চলিক আবহাওয়া কার্যালয়ের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ জানান, কালবৈশাখী ঝড় আসবে এমন প্রভাবে এ বৃষ্টিপাত। খুলনায় মঙ্গলবার সারাদিনই বৃষ্টিপাত হয়েছে। বাতাসের গতিবেগ ছিলো ৫৬ কিলোমিটার। হালকা শিলাবৃষ্টিও হয়েছে। আরও ২-১ দিন এমন আবহাওয়া থাকবে বলে তিনি জানিয়েছেন।