January 19, 2025
আঞ্চলিকলেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

খুলনায় জাপা নেতা আবুল কাশেম হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু

উচ্চ আদালতের আদেশে প্রায় ৭ বছর স্থগিত ছিল

দ. প্রতিবেদক
প্রায় ৭ বছর পর খুলনা মহানগর জাতীয় পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, খুলনা শিল্প ও বণিক সমিতির সাবেক সভাপতি এবং সাবেক সাংসদ শেখ আবুল কাশেম হত্যা মামলার বিচারিক কাযক্রম শুরু হয়েছে। এতোদিন মামলাটি পরিচালনায় উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ ছিল।
রবিবার সেখান থেকে ওই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের চিঠি খুলনা জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে আসে। এরপর ওই মামলার অবশিষ্ট কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আগামী ২৬ জানুয়ারি দিন ধায্য করেছেন ওই আদালতের বিচারক (জেলা জজ) মো. সাইফুজ্জামান হিরো।
খুলনা জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আরিফ মাহমুদ লিটন বলেন, আদালতের পাওয়া চিঠি অনুযায়ী উচ্চ আদালত ওই মামলার স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেছেন ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে। আর তাতে ওই আদালতের রেজিস্ট্রার স্বাক্ষর করেছেন ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। কিন্তু কোনো এক অজানা কারণে ওই চিঠিটি খুলনায় আসতে এতোদিন লেগেছে। আদালতের কাছে চিঠি আসার সঙ্গে সঙ্গে ওই মামলার কাযক্রম চালানো জন্য পরবর্তী দিন ধার্য্য করা হয়েছে আগামী ২৬ জানুয়ারি।
১৯৯৫ সালের ২৫ এপ্রিল দুপুরে খুলনা থানার সামনে প্রকাশ্যে আবুল কাশেম ও তার গাড়িচালক মিকাইল হোসেনকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ১৯৯৬ সালের ৫ মে সিআইডি’র সহকারী পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন আদালতে ১০ জনের নামে ওই হত্যা মামলার চার্জশিট দাখিল করেন। ওই হত্যা মামলায় তিন আসামি আদালতের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছিলেন। চার্জশিট অনুযায়ী ওই হত্যাকান্ডে জড়িত ১০ জনের মধ্যে একজন মামলা থেকে অব্যহতি পেয়েছেন। আর দুইজন মারা গেছেন। বাকি ৭ আসামি বর্তমানে ‘জামিনে’ রয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৭ সালে চার্জশিট থেকে একজনের নাম বাদ দেওয়ায় আদেশ স্থগিত চেয়ে প্রথম দফা আবেদন করেন ওই মামলার বাদী আলমগীর হোসেন। ১৯৯৯ সালে সেই আদেশ প্রত্যাহার করে নেন উচ্চ আদালত। ২০০৯ সালেও মামলার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। ২০১৩ সালে সেটি প্রত্যাহার করে নেন উচ্চ আদালত। পরে মামলাটি পুনরায় চালু হলে আসামি আব্দুল গফ্ফার বিশ্বাসের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের মার্চ মাসে মামলাটি ছয় মাসের জন্য আবার স্থগিত করেন উচ্চ আদালত। পরে ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে রুলের নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত আদেশ দেওয়া হয়।
খুলনা জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের উচ্চমান বেঞ্চ সহকারী মো. ছায়েদুল হক বলেন, ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মামলাটি জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে আসে। ওই সময় এক জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে চাঞ্চল্যকর মামলা হিসেবে সেটি দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে পাঠানো হয়। সেখানে ১৭ জনের স্বাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। কিন্তু ১৩৫ দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় ওই বছরই তা আবার জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে চলে আসে। কিন্তু এতো দিন স্থগিতাদেশ থাকায় মামলাটি ওইভাবে পড়ে ছিল। সর্বশেষ উচ্চ আদালতের চিঠি পাওয়ার পর পুনরায় মামলার কাযক্রম শুরু হয়েছে।
আবুল কাশেমের ভাইপো ও ওই হত্যা মামলার তিন নম্বর স্বাক্ষী শেখ মনিরুজ্জামান বলেন, ‘শুধু আমার পরিবার নয় খুলনাবাসী সবাই চান ওই মামলার বিচার হোক।’ তবে আর যেন কোনো ভাবেই মামলাটি স্থগিত করা না হয় সেই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আদালতের কাছে অনুরোধ করেন তিনি।

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *