November 26, 2024
আঞ্চলিকলেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

খুলনায় কোভিড পরীক্ষার আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

কোভিড-১৯ পরীক্ষা বাবদ নেওয়া আড়াই কোটিরও বেশি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে খুলনা জেনারেল হাসপাতালের এক মেডিকেল টেকনোলজিস্টের বিরুদ্ধে।

এই অভিযোগে বৃহস্পতিবার হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) প্ৰকাশ কুমার দাসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক মামলা করেছে।

দুদকের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক খন্দকার কামরুজ্জামান বাদী হয়ে দণ্ডবিধির ৪০৯ ও ৪২০ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

গত প্রায় দুই মাস থেকে প্ৰকাশ কুমার দাস পলাতক রয়েছেন।

কামরুজ্জামান বলেন, রোগী ও বিদেশগামী যাত্রীদের কোভিড-১৯ পরীক্ষা বাবদ উত্তোলন করা সরকার নির্ধারিত অর্থ সঠিকভাবে কোষাগারে জমা হয়েছে কি না দেখতে জেলা সিভিল সার্জন ও ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. নিয়াজ মোহাম্মাদ পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন।

“তদন্তে উঠে আসে ফি উত্তোলনে দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে চলতি বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত গত এক বছরে প্রকাশ কুমার দাস মোট ৪ কোটি ২৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯০০ টাকা আদায় করেছেন।

“এর মধ্যে তিনি ১ কোটি ৬৬ লাখ ৯৬ হাজার ৭০০ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছেন। বাকি ২ কোটি ৫৭ লাখ ৯৭ হাজার ২০০ টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন।”

খুলনায় হাসপাতালের ‘আড়াই কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা’ টেকনোলজিস্ট

দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক জানিয়েছেন, গত ২৭ সেপ্টেম্বর খুলনা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে জিডির কপিসহ প্রকাশ কুমার দাসের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে দুদকের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ে একটি অভিযোগ জমা পড়ে।

এই অভিযোগের অনুসন্ধান শেষে প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় মামলাটি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

এই ঘটনায় গত ২৮ সেপ্টেম্বর “খুলনায় হাসপাতালের ‘আড়াই কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা’ টেকনোলজিস্ট” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

ওই সময় খুলনার সিভিল সার্জন জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, “গত ডিসেম্বরে খুলনার সিভিল সার্জন হিসেবে যোগদান করার পর জানতে পারি কোভিড-১৯ পরীক্ষার কাজে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবকরা সিভিল সার্জনের নাম করে সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন।

তিনি বলেন, গত এপ্রিলে ব্যাপারটি প্রমাণিত হওয়ার পর স্বেচ্ছাসেবকদের বাদ দেওয়া হয়। আর বিদেশগামীদের কোভিড-১৯ পরীক্ষার মূল দায়িত্বে থাকা প্রকাশের কাছে সব পরীক্ষার তথ্য ও হিসাব চাওয়া হয়। তবে হিসাব জমা দিতে গড়িমশি করেন তিনি।

সিভিল সার্জন বলেন, গত ২২ অগাস্ট সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ১৬ সেপ্টেম্বর ওই কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। তাতে দেখা যায়, প্রকাশের জমা দেওয়া টাকার সঙ্গে দুই কোটি ৫৮ লাখ টাকার অসংগতি রয়েছে।

“পরদিন প্রকাশকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ও ওই টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার [২৩ সেপ্টেম্বর]ওই টাকা জমা দেওয়ার কথা ছিল। এরপর থেকে আর তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিয়েও প্রকাশকে না পেয়ে খুলনা থানায় মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। প্রকাশ যেন দেশত্যাগ করে পালিয়ে যেতে না পারেন, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।”

হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানান, ২৩ সেপ্টেম্বর দুপুরের দিকে অফিস থেকে বের হওয়ার পর থেকে আর তিনি অফিসে আসেননি। বাসায় খোঁজ নিয়েও পাওয়া যায়নি।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *