খুলনায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর ছড়াছড়ি
* চেয়ারম্যান পদে ৩২ জনের মনোনয়ন জমা
জয়নাল ফরাজী
৫ম উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে খুলনা জেলার নয় উপজেলায় মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল গতকাল সোমবার। খুলনার ৯টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে লড়তে ৩২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ৫৮জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ৩৮জন।
খুলনার ৯টি উপজেলায় উপজেলা চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ একক প্রার্থী চূড়ান্ত করে দিলেও একটি উপজেলা বাদে বাকি সব উপজেলাগুলোতেই রয়েছেন একাধিক প্রার্থী। দলের মনোনীত ৮জন প্রার্থীর বিপরীতেই লড়ছেন বিদ্রোহীরা। ফলে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রাপ্ত অনেকেই রয়েছেন শঙ্কায়।
সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত নয় উপজেলার সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় ও দুই রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন প্রার্থীরা। মনোনয়নপত্র জমা দান শেষে প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্র“তির কথা বলেন গণমাধ্যমের নিকট।
সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার এম মাজহারুল ইসলাম জানান, খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলাতেই শুধুমাত্র একজন প্রার্থী উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। তিনি হলেন বর্তমান চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম খান (আওয়ামী লীগ মনোনীত)।
এছাড়া দাকোপে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তিনজন প্রার্থী। এরা হলেন মুনসুর আলী খান (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী), শেখ আবুল হোসেন (আওয়ামী লীগ মনোনীত) এবং গৌরাঙ্গ প্রসাদ রায় (ওয়ার্কার্স পার্টি)।
ডুমুরিয়ায় উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন পাঁচজন প্রার্থী। এরা হলেন মোস্তফা সরোয়ার (আওয়ামী লীগ মনোনীত), মাহবুর রহমান (স্বতন্ত্র), শাহনেওয়াজ হোসেন জোয়াদ্দার (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী), গাজী এজাজ আহম্মেদ (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী) ও সেলিম আকতার স্বপন (ওয়ার্কার্স পার্টি)।
ফুলতলায় উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন চারজন প্রার্থী। এরা হলেন বর্তমান চেয়ারম্যান শেখ আকরাম হোসেন (আওয়ামী লীগ মনোনীত), শেখ আবিদ হোসেন (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী), হাসনাত রিজভী মার্শাল (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী) ও শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন।
পাইকগাছায় উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন চারজন প্রার্থী। এরা হলেন গাজী মোহাম্মদ আলী (আওয়ামী লীগ মনোনীত), সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রশিদুজ্জামান মোড়ল (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী), শেখ মনিরুল ইসলাম (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী) ও শেখ আবুল কালাম (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী)।
কয়রায় উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তিনজন প্রার্থী। এরা হলেন জি এম মহসিন রেজা (আওয়ামী লীগ মনোনীত), এস এম শফিকুল ইসলাম (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী) ও আব্দুলাহ আল মামুন (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী)।
রূপসায় উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন পাঁচজন প্রার্থী। এরা হলেন বর্তমান চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন বাদশা (আওয়ামী লীগ মনোনীত), সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আলী আকবর (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী), ওলিয়ার রহমান মাস্টার (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী), জাতীয় পার্টির ফিরোজ মামুন ও শওকত আলী (স্বতন্ত্র)।
তেরখাদায় উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন চারজন প্রার্থী। এরা হলেন বর্তমান চেয়ারম্যান সরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু (আওয়ামী লীগ মনোনীত), অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান কালু (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী), শেখ শহিদুল ইসলাম (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী), বাদশা মলিক (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী)।
দিঘলিয়ায় উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তিনজন প্রার্থী। এরা হলেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান খান নজরুল ইসলাম (আওয়ামী লীগ মনোনীত), শেখ মারুফুল ইসলাম (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী) ও মলিক মহিউদ্দিন (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী)।
বিদ্রোহীদের বিষয়ে খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. সুজিত অধিকারী বলেন, কেন্দ্র থেকেই বিষয়টি ওপেন করে দেওয়া হয়েছে। কারণ ভোটের অধিকার সবারই রয়েছে। আমরা চাই সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হোক।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৬ মার্চ মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই। ১৩ মার্চ মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষদিন ও প্রতীক বরাদ্দ। ৩১ মার্চ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।