November 22, 2024
আঞ্চলিকলেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

খুলনায় আলোচিত জাকির হত্যাকাণ্ডের ১০ বছর পর মূলহোতা গ্রেফতার

পিবিআই’র সংবাদ সম্মেলন: পরকীয়ার জেরে বিরোধ

দ. প্রতিবেদক
বাংলাদেশ দলিল লেখক সমিতির কেন্দ্রীয় নেতা খান মো. জাকির হোসেন হত্যাকাণ্ডের প্রায় ১০ বছর পর অর্থযোগানদাতা ও পরিকল্পনাকারী হিসেবে সন্দেহভাজন মো. বাহাউদ্দিন খন্দকার (৪৮) গ্রেফতার হয়েছে। সোমবার রাতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর একটি দল খুলনা নগরীর সোনাডাঙ্গা থানাধীন বয়রা এলাকার মৌ মার্কেট এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। আসামি বাহাউদ্দীন হরিণটানা থানাধীন রায়েরমহল বাউন্ডারি রোডের বাসিন্দা। তিনি ১৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও খুলনা সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিস দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বরত।
মঙ্গলবার বিকেলে পিবিআই খুলনা জেলা দফতরে পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, জাকির মুহুরির সহকারী হিসেবে কাজ করত বাহাউদ্দিন। তাছাড়া ভিকটিমের তৃতীয় স্ত্রীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক ছিল। এটা জানতে পেরে তাদের সম্পর্কের অবনতি হয়। একপর্যায়ে বাহাউদ্দিন তাকে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকে। এক সময়ে সুযোগও এসে যায়। ভাড়াটে খুনী ঠিক করে বাহাউদ্দিন। ওই দিন সন্ধ্যায় কয়েকজন দুর্বৃত্ত অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তার চেম্বারের সামনে যায়। অফিস বন্ধ করে বাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতির সময় সন্ত্রাসীরা তাকে গুলি করে। বোমা ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়। মারত্মক জখম অবস্থায় মার্কেটের অন্যান্য সদস্যরা তাকে নিয়ে খুলনা জেনারেল হাসপাতালে পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে অবস্থা খারাপ হলে তাকে যশোর সিএমএইচ-এ প্রেরণ করা হয়। পথিমধ্যে তিনি মারা যান। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে খুলনা থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ঘটনাটি ঘটার দু’দিন আগে বাহাউদ্দিন নেপালে চলে যায়। পাঁচ দিন পর তিনি দেশে ফেরেন। ফিরে তিনি উচ্চ আদালত থেকে গ্রেপ্তারসহ হয়রানি না করার জন্য মিস পিটিশন মামলা করেন। যার নং ৭০৫৯/১২। মামলা দায়ের করে সময় বর্ধিত করে আসছিল সে। উক্ত মিসপিটিশনটি দীর্ঘ শুনানি শেষে গত ২০২১ সালে নিস্পত্তি করা হয়। নিষ্পত্তি আদেশ পাওয়ায় সোমবার রাতে বয়রা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলাটি পিবিআই এর আগে সদর থানা পুলিশ, পরে ডিবি, এরপর সিআইডি গ্রহণ করে। সাত বছর তদন্ত করে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করেন। পরবর্তীতে বাদীর না রাজি পিটিশনে মামলাটি তদন্তের জন্য আদালত পিবিআইকে নির্দেশ দেয়। বাহাউদ্দিন গ্রেপ্তার হওয়ার পর পুলিশের নিকট গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত আছে এমন আরও এক ব্যক্তির নাম বলেছে। তাকে সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে প্রেরণ করা হবে বলে জানিয়েছে পিবিআই। ২০১৯ সালে মামলাটি গ্রহণ করে পিবিআইয়ের এসআই পলাশ চন্দ্র রায়। তিনি বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করেন। তারপর এর ক্লু বের করতে সক্ষম হন।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ২০ মে সন্ধ্যায় একদল ঘাতক বাংলাদেশ দলিল লেখক সমিতির কেন্দ্রীয় নেতা খান মো. জাকির হোসেনকে গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী জামিলা বেগম অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে খুলনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ জে এফ জয়

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *