খুলনার মশিয়ালীতে ট্রিপল মার্ডারে ব্যবহৃত অস্ত্রের সন্ধান তিনদিনেও মেলেনি
* এখনো অধরা প্রধান আসামী জাকারিয়া ও মিল্টন
* শেখ জাফরিনসহ তিনজনের রিমান্ড মঞ্জুর
জয়নাল ফরাজী…
খুলনার খানজাহান আলী থানাধীন মশিয়ালীতে ট্রিপল মার্ডারের তিনদিন অতিবাহিত হলেও হতাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রের সন্ধান পায়নি পুলিশ। এ মামলায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার দেখানো হলেও মূলহোতা শেখ জাকারিয়া হাসান ও তার ভাই শেখ মিল্টন হাসান রয়েছেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এদিকে মামলার অন্যতম আসামি শেখ জাফরিন হাসানসহ তিনজনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রবিবার দুপুরে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলাম এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) কানাই লাল সরকার দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে জানান, মামলার এজাহারভুক্ত আসামি শেখ জাফরিন হাসানকে ৮ দিন, আরমান ও জাহাঙ্গীরকে ৭ দিনের পুলিশী রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এর আগে এজাহারভুক্ত ওই তিনজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) লুৎফর হায়দার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই লুৎফর হায়দার বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামীদের ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছিলাম। আদালত শুনানী শেষে আসামী শেখ জাফরিন হাসানকে ৮ দিনের এবং আরমান ও জাহাঙ্গীরকে জিজ্ঞাসাবাদে ৭ দিনের করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। এ পর্যন্ত মামলাটিতে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
তিনি আরও জানান, গুলিবর্ষণে ঘটনায় ব্যবহৃত অবৈধ অস্ত্র এখন উদ্ধার করা যায়নি। তবে অনুসন্ধান চলছে।
খানজাহান আলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র ও পলাতকদের গ্রেফতারে এখনো অভিযান চলমান।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে মুজিবর নামে এক ব্যক্তিকে অস্ত্রসহ খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সহ-প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া এবং তার ভাই খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি জাফরিন ও মিল্টন পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেয়। মুজিবরের গ্রেফতার নিয়ে মূল উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এরপর গ্রামের বেশ কয়েকজন জাকারিয়ার বাড়িতে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করতে যায়। এসময় জাকারিয়া ও তার লোকজনের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে জাকারিয়া, জাফরিন, কবির ও মিল্টন তাদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। এ সময় গুলিতে নজরুল ইসলাম, গোলাম রসুল, সাইফুল ইসলাম, শামীম, রবি, সুজন, রানা ও খলিলসহ ৮-১০ জন গুলিবিদ্ধ হয়। গুলিবিদ্ধদের উদ্ধার করে ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নজরুল ইসলাম ও গোলাম রসুলকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত অন্যান্যদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত পৌনে ১টার দিকে সাইফুল ইসলাম মারা যায়। এ ঘটনার পর রাত ২টার দিকে ক্ষুব্ধ অপরপক্ষের গণপিটুনিতে জাকারিয়ার সহযোগী জাহিদ শেখ (৩০) মারা যায়।
এ ঘটনায় গুলিতে নিহত সাইফুল শেখ এর পিতা সাইদুল শেখ গত শনিবার রাতে বাদী হয়ে ২২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১৫/১৬ জনকে আসামি করে খানজাহান আলী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার নং ১২, তারিখ ১৮/০৭/২০২০ ইং। এর আগে শনিবার বিকেলে যশোর জেলার বাঘারপাড়া উপজেলার দাতপুর গ্রাম থেকে মামলার অন্যতম আসামি শেখ জাফরিন হাসানকে গ্রেফতার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এছাড়া শুক্রবার যশোরের অভয়নগর থেকে আসামি জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে মামলার প্রধান আসামী জাকারিয়ার শ্যালক আরমানকেও গ্রেফতার করা হয়।
দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ