খুলনার উন্নয়নে বাধা কেডিএ
* সংবাদ সম্মেলনে সিটি মেয়রের অভিযোগ
* একনেকে পাশ হওয়া উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ আগামী
৬ মাসের মধ্যে শুরু না হলে তীব্র আন্দোলন
দ. প্রতিবেদক
খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কেডিএ) কারণে মহানগরীর উন্নয়ন কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং যার কারণে উন্নয়নকাজ পিছিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন সিটি মেয়র আলহাজ¦ তালুকদার আব্দুল খালেক। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে এবং আগামী ৬ মাসের মধ্যে একনেকে পাশ হওয়া উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কাজ শুরু না হলে তীব্র আন্দোলন করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবের শহীদ হুমায়ুন কবির বালু মিলনায়তনে মহানগরীর রাস্তাঘাট, ফুটপাথ, ব্রিজ-কালভার্ট, পয়:নিষ্কাশনে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, ২২ খালের অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদসহ খুলনার সার্বিক উন্নয়ন নিয়ে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব বলেন।
সিটি মেয়র আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে বরাদ্দের অর্থ পাওয়ার পরও বছরের পর বছর কেডিএ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে না। তাদের তৈরি করা রাস্তা-ঘাট, বাস টার্মিনাল সংস্কার করছে না। খুলনার মানুষ মনে করছে, সব সিটি কর্পোরেশনের ব্যর্থতা। আসলে তা নয়। কেডিএ’র কারণেই খুলনার অনেক উন্নয়ন পিছিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, কেডিএ সোনাডাঙ্গা, নিরালা, দৌলতপুর, ফুলবাড়ীগেটসহ মোট ৫টি আবাসন প্রকল্প করলেও পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা রাখেনি। নিরালায় রেকর্ডীয় খাল বন্ধ করায় পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। ১৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ময়ুরী আবাসিক প্রকল্প গড়ে তুললেও সেখানে একই অবস্থা। ১৯৬১ সালে কেডিএ স্থাপিত হওয়ার পর নতুন বাজার, নিউ মার্কেট এবং সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড নির্মাণ করেছে। এগুলো কেসিসি’র কাছে হস্তান্তরের সরকারি সিদ্ধান্ত থাকলেও বাস্তবায়িত হচ্ছে না।
সিটি মেয়র বলেন, কেডিএর তৈরিগুলোর অধিকাংশই রাস্তা, বাস টার্মিনাল সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ অবস্থা। সংস্কারের অর্থ নেই, বলছে কেডিএ। অথচ, নিউ মার্কেট, বাস টার্মিনাল ও প্লট ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকার ডিপোজিট করে সুদ খাচ্ছে। খুলনার মানুষের টাকা জমিয়ে সুদ খাবেন, অথচ রাস্তাঘাট ঠিক করবে না- এমন সেবামূলক সংস্থা থাকার কি দরকার?
কেডিএর কর্মকান্ডের কড়া সমালোচনা করে খুলনা সিটি মেয়র বলেন, বর্তমান সরকার খুলনার উন্নয়নে একাধিক রাস্তা স্থাপনা জন্য অর্থ বরাদ্দ দিলেও তারা যথাসময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে না। ফলে জনসাধারণের দুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে ও আগামী ছয়মাসের মধ্যে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কাজ শুরু না হলে খুলনার স্বার্থে খুলনাবাসীকে সাথে নিয়ে আন্দোলন করা হবে বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তিনি।
মেয়র খালেক বলেন, কেডিএ’র প্রকল্প অপরিকল্পিতভাবে বাস্তবায়নের ফলে নগর জীবন ব্যাহত হচ্ছে। আমাদের প্রত্যাশা ড্রেন পরিস্কার করে মশা নিধন করা, অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে খাল উচ্ছেদ করে পানি নিষ্কাসন সহজতর করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুলনায় রাস্তাঘাট উন্নয়নে ৬০৭ কোটি এবং ড্রেন নির্মাণে ৮২৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন। নগরবাসীর উন্নয়নে আমরা তা বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- খুলনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশিদ, কেসিসি’র প্যানেল মেয়র মোঃ আমিনুল ইসলাম মুন্না, মোঃ আলী আকবর টিপু ও মেমরী সুফিয়া রহমান শুনু, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ কান্তি বালা, খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এসএম নজরুল ইসলাম, নবনির্বাচিত সভাপতি এস এম জাহিদ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মামুন রেজা, কেসিসি’র প্রধান প্রকৌশলী এজাজ মোর্শেদ চৌধুরী, নির্বাহী প্রকৌশলী খান মশিউর রহমান, লিয়াকত আলী খান প্রমুখ।
দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ