খুবিতে আমরণ অবস্থানে দুই শিক্ষার্থী, আত্মপক্ষ সমর্থনের পরামর্শ ভিসি’র
রেজওয়ান আহম্মেদ, খুবি
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের সাথে অসদাচারণ ও তদন্তে অসহযোগিতার দায়ে অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থী তাদের বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে টানা আমরণ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। রবিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী ইমামুল ইসলাম ও বাংলা ডিসিপ্লিনের ১৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. মোবারক হোসেন নোমান এ অনশন শুরু করেন।
এসময় তারা বলেন, পাঁচ দফা আন্দোলনে যুক্ত থাকায় আমাদেরকে অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমাদের বহিষ্কারাদেশ আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় আমরা আমরণ অনশন চালিয়ে যাব।
এদিকে সোমবার সন্ধ্যায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান ও উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে শাস্তি প্রত্যাহারের দাবিতে অবস্থানরত দুই শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলেন। উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্য ওই দুই শিক্ষার্থীকে বিভিন্নভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেন। তাঁরা উভয়ই শৃঙ্খলাবোর্ড প্রদত্ত শাস্তি প্রত্যাহারে নিয়মতান্ত্রিকভাবে আবেদন করার জন্য তাদের পরামর্শ দেন।
উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম-কানুনের প্রতি সকলের শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিৎ। তাদেরকে যে অভিযোগের ভিত্তিতে শাস্তির প্রদানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে এতে আত্মপক্ষ সমর্থনের একাধিক সুযোগ রয়েছে। তারা তাদের আচরণের জন্য দুঃখ প্রকাশ বা অনুশোচনা প্রকাশ করলে এখনও বিষয়টি পুনর্বিবেচনার সুযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে যে দু’জন সম্মানিত শিক্ষকের সাথে অসদাচরণ করা হয়েছিলো, শিক্ষার্থীরা তাদের কাছেও দুঃখ প্রকাশ করতে পারেন। উপাচার্য ঐ দুই শিক্ষার্থীকে আশ্বাস দেন, তারা যথাযথ প্রক্রিয়া অবলম্বন করে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ গ্রহণ করলে কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনার অপেক্ষা রাখে।
এছাড়া সকালে উপাচার্য অফিসে প্রবেশের আগে অবস্থানরত ঐ দুই শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলেন এবং একইভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ গ্রহণের আহবান জানান। সকালে উপাচার্যের সাথে ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর মোঃ শরীফ হাসান লিমন এবং সন্ধ্যায় সহকারী ছাত্র বিষয়ক পরিচালকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক ও শৃঙ্খলা বোর্ডের সদস্য সচিব মো. শরীফ হাসান লিমন বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, আবাসিক হলে জুনিয়র শিক্ষার্থীদের রাতভর শারীরিকভাবে নির্যাতন ও গালিগালাজ করার অপরাধে পাঁচজন এবং তদন্ত ও একাডেমিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করার দায়ে আরো দুইজন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি প্রদান করা হয়।
এ ঘটনার পর শনিবার (১৬ জানুয়ারি) শিক্ষার্থীরা খুলনা প্রেসক্লাবে বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহারের জন্য সংবাদ সম্মেলন করেন। পাশপাশি ২৪ ঘন্টার সময় বেঁধে দেন প্রশাসনকে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় রবিবার রাত ৭টা থেকে ফের ৪৮ ঘণ্টার কর্মসূচি শুরু করা হয়েছে।
দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ