খালেদার বিষয়ে কোনো আন্তর্জাতিক চাপ নেই: কাদের
দুর্নীতির মামলায় কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে সরকার কোনো ধরনের আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে নেই বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলের যৌথসভা শেষে কাদের বলেন, “আন্তর্জাতিক কোনো চাপ আমরা অনুভব করছি না।”
দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের সাজা নিয়ে গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে আছেন ৭৪ বছর বয়সী খালেদা জিয়া। বর্তমানে তার চিকিৎসা চলছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে।
সোমবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে সাক্ষাতে খালেদার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন সফররত ইইউর মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ দূত এমন গিলমোর।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “বিএনপি তার স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে, কিন্তু ডাক্তাররা তো কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করছে না। বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য উদ্বেগের পর্যায়ে আছে এটা আমাদের জানা নেই। মেডিকেল বোর্ডও এরকম কোনো তথ্য দিতে পারেনি।”
তিনি আরও বলেন, “বেগম জিয়ার পক্ষে কিছু করতে পারেনি বলে বিএনপি নেতারা মুখ রক্ষার জন্য, কর্মীদের চাঙ্গা করার জন্য নানা কথা বলছেন। বিএনপি নেতারা বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে যতটা না উদ্বিগ্ন, তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে রাজনীতি করতেই তারা বেশি অভ্যস্থ এবং ব্যস্ত।
“বিএনপি বারবার বিদেশিদের কাছে ধরনা দিচ্ছে, বিদেশিরা কখনও বলেনি বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য খারাপ। তারা বলেছে, বন্দি অবস্থায় যেন ভালো চিকিৎসা হয়। ভালো চিকিৎসা তো হচ্ছে, ডাক্তারদের পক্ষ থেকে তো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।”
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, তার দল প্রত্যাশা করে, দেশে একটি শক্তিশালী বিরোধীদল থাকা প্রয়োজন।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের পরে সংসদে যোগদান প্রশ্নে টানাপড়েনের প্রেক্ষাপটে সোমবার সরকারবিরোধী জোট ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকের বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, “ঐক্যফ্রন্টে সমন্বয় নেই, ঐক্য নেই, আমরা সেটা চাই না। ঐক্যফ্রন্ট ঐক্যবদ্ধ হোক, তাদের মধ্যে সমন্বয় হোক, বাংলাদেশে একটা শক্তিশালী দায়িত্বশীল বিরোধীদল গণতন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য শুভ।
“শক্তিশালী দায়িত্বশীল বিরোধীদল আমরা চাই। সংসদের ভেতরে এবং বাইরে শুধু দায়িত্বশীল নয়, শক্তিশালী বিরোধীদল আমরা চাই। বিরোধীদল যথাযথ ভূমিকা পালন করবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা, শেখ হাসিনা সরকারের প্রত্যশা, সরকারী দল আওয়ামী লীগের প্রত্যাশা।”
আওয়ামী লীগের নেতারা প্রতিহিংসা মূলক বক্তব্য দিচ্ছে, বিএনপির এমন অভিযোগের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যারে দেখতে নারি, তার চলন বাঁকা। শেখ হাসিনার ভালো কাজ তারা দেখতে পায় না, উন্নয়ন তাদের চোখে পড়ে না। কারণ হচ্ছে তারা ধরে নিয়েছে তাদের রাজনীতি হচ্ছে বিরোধীতার জন্য বিরোধীতা। বাস্তব অবস্থার কোনো বিচার বিশ্লেষণ তারা করছে না। আসলে উন্নয়ন দেখার জন্য তাদের এখন পাওয়ারের চশমা দরকার। পাওয়ারের চশমা হলে হয়তবা দেখতে পাবেন।”
রুমিন ফারহানা বিএনপির নারী সাংসদ হিসেবে শপথ নিয়েই একাদশ সংসদকে অবৈধ বলায় তার প্রশংসা করেন কাদের।
“তার সাহসের আমরা প্রসংশা করি যে, তিনি সংসদে এসেছেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম তো পাস করেও সংসদে আসেননি। সংসদে এসে সংসদের বিরুদ্ধে বলুক, সরকারের বিরুদ্ধে বলুক এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। সংসদ সদস্য হয়ে কিভাবে এই সংসদকে অবৈধ বললেন এর মীমাংসা সংসদেই হবে।”
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গির কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এ কে এম এনামুল হক শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় সদস্য মারুফা আক্তার পপি, কামরুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাত, সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম, দক্ষিণের মেয়র সাইদ খোকন যৌথসভায় উপস্থিত ছিলেন।