খালেদার বিচারে কেরানীগঞ্জ কারাগারে বসছে আদালত
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মামলাগুলোর বিচারে কেরানীগঞ্জের কারাগারে আদালত বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার, যার মধ্য দিয়ে তাকে ওই কারাগারে স্থানান্তরের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন এখন চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে রয়েছেন।
পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন সড়কের পুরনো কারাগারে এক বছরের বেশি সময় বন্দি থাকার পর গত গত ১ এপ্রিল চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। এতদিন নাজিমউদ্দিন সড়কের কারাগারের পাশে স্থাপিত আদালতে আদালত বসিয়ে খালেদা জিয়ার অন্য বেশ কয়েকটি মামলার বিচার চলছিল। এখন সেগুলো কেরানীগঞ্জের নতুন কারাগারে যাবে।
খালেদা জিয়ার বিচারে আদালত স্থানান্তরে প্রজ্ঞাপন রোববার হয়েছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে। দুর্নীতি দমন কমিশনের কৌঁসুলি মোশাররফ হোসেন কাজল সোমবার এ তথ্য নিশিচত করেন।
তিনি বলেন, কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে নবনির্মিত ২ নম্বর ভবনের অস্থায়ী আদালতে নাইকো দুর্নীতি মামলাসহ অন্য মামলাগুলোর বিচার হবে। নিরাপত্তার স্বার্থে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে নবনির্মিত ২ নম্বর ভবনের অস্থায়ী আদালতে মামলাগুলোর বিচারিক কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে।
নাইকো দুর্নীতি মামলা ছাড়াও রাজধানীর দারুস সালাম থানার নাশকতার ৮ মামলা, যাত্রাবাড়ী এলাকায় বাসে অগ্নিকাণ্ডের মামলা এবং মানহানির অভিযোগে করা তিনটি মামলার বিচারে ঢাকার জজ আদালতের একটি এজলাস বসবে কেরানীগঞ্জের কারাগারে।
কাজল বলেন, এগুলো ছাড়া আরও কয়েকটি মামলার বিচারও ওই আদালতে হবে। এই মামলাগুলোর বিচার এতদিন নাজিমউদ্দিন সড়কের কারাগারে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালত এবং কারাগারে পাশে বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরের মাঠে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালতে চলছিল। ঢাকার জজ আদালতের মূল ভবন থেকে নিয়ে কারাগারের পাশে আদালত বসানোর ক্ষেত্রেও নিরাপত্তাকে কারণ দেখিয়েছিল আইন মন্ত্রণালয়।
বিএনপি বরাবরই বাইরে আদালত বসিয়ে বিচারের বিরোধিতা করে আসছে। পাশাপাশি পুরনো কারাগারে একমাত্র বন্দি হিসেবে রেখে ৭৪ বছর বয়সী খালেদাকে আরও অসুস্থ করে ফেলা হচ্ছে বলে দলটির নেতারা অভিযোগ করে আসছেন।
এক বছর ধরে নাজিমউদ্দিন সড়কের কারাগারে বন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদাকে তিন বছর আগে চালু হওয়া কেরানীগঞ্জের কারাগারে স্থানান্তরের পরিকল্পনার কথা স¤প্রতি জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারটি জাদুঘরে রূপান্তরের কাজ শুরু হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেছিলেন, খালেদাকে কেরানীগঞ্জের কারাগারে নেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে, যো কোনো সময়ই নেওয়া হবে। তবে বিএনপি এরও বিরোধিতা করে আসছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য শুনে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছিলেন, কেরানীগঞ্জ কারাগারের নির্মাণ কাজ এখনও শেষ হয়নি, সেখানে গ্যাস-পানির এখনও তেমন কোনো সুবন্দোবস্ত নেই। নির্মাণাধীন একটি কারাগারে স্থানান্তরের সরকারি চিন্তাভাবনা মনুষ্যত্বহীন পদক্ষেপ।