খালেদার বাসায় পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি বিএনপির
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বাসভবন ‘ফিরোজা’য় পুলিশের নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
দুর্নীতির দুই মামলায় ২৫ মাস সাজাভোগের পর ‘মানবিক বিবেচনায়’ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্ত সাপেক্ষে গত ২৫ মার্চ মুক্তিলাভের পর ওই বাসাতে আছেন খালেদা জিয়া।
বৃহস্পতিবার সকালে এক সংবাদ ব্রিফিঙে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “তার (খালেদা জিয়া) নিরাপত্তার জন্য মাননীয় চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব আইজিপি বরাবরে আবেদন করলেও এ বিষয়ে এখনও পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
“বিএনপির পক্ষ থেকে আমি অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিরাপত্তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পুলিশের আইজিপির নিকট অনুরোধ জানাচ্ছি।”
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে নিরাপদ দূরত্ব রক্ষার নির্দেশনা মেনেই নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রিজভীর ব্রিফিংয়ে অংশ নেন সংবাদকর্মীরা।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকারের প্রস্তুতির প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, “সরকার বলছে, সবকিছু নিয়ন্ত্রণে, পশ্চিমা মিডিয়া বলছে- আগামী দুই সাপ্তাহ বাংলাদেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। মৃত্যু হানা দিচ্ছে দেশে দেশে। আর করোনা যদি এখনই কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ না করা যায় তবে তা ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনবে। ইতিমধ্যে বিদেশি কূটনীতিকরা দলে দলে ঢাকা ছাড়ছেন।
“আমরা মনে করি, সরকারের নীতির কারণেই দেশের করোনা পরিস্থিতির আসল চিত্র ফুটে উঠছে না। ভেতরে ভেতরে সংক্রমণ হতে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে পারে। আজকের পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে, গতকাল ২৪ ঘণ্টায় করোনার উপসর্গ জ্বর, সর্দি, কাশি, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে মারা গেছেন কয়েকজন। আর সরকারি হিসেবে মারা গেছেন একজন। এক্ষেত্রে পরীক্ষা বাড়ানোর পাশাপাশি লকডাউন ও হোম কোয়ারেন্টিনকে গুরুত্ব দিতে হবে।”
রিজভী বলেন, “তথ্য গোপন করে এই মহামারী এড়ানো যাবে না। সঠিক তথ্য দিয়ে এই রোগের ভয়াবহতা বুঝিয়ে জনগণকে কোয়ারেন্টিন মেনে চলতে অনুপ্রাণিত করতে হবে।
“আমরা মনে করি, করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধ, সুরক্ষা ও প্রতিকারে সরকারের পরিকল্পনা সম্পর্কে প্রকৃত তথ্য দিয়ে মানুষের আস্থা তৈরি করা উচিত। সরকারের তথ্য গোপন পলিসির সমালোচনা করার কারণে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গত কয়েকদিনে বিএনপির ১২ নেতাকর্মী ও চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা অবিলম্বে তাদের মুক্তি দাবি করছি।”
বিএনপির নেতাকর্মীরা সংকটের সময় জনগণের পাশে দাঁড়ায়নি- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এই বক্তব্য খণ্ডন করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “কাদের সাহেবের বক্তব্য সঠিক নয়। তাকে বলতে চাই, গণতন্ত্রকে জাদুঘরে পাঠিয়েছেন বলেই সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরাকে অপতৎপরতা হিসেবে অভিহিত করছেন।”
রিজভী বলেন, “যখন করোনা প্রাদুর্ভাব শুরু হল তখন আমরাই রাজপথে নেমেছি, সারাদেশে প্রথম সচেতনতা শুরু করেছি। আমরা এবং আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব এই দুঃসময়ে দেশের সকল রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, শ্রেণি-পেশার সংগঠন অর্থাৎ সর্বস্তরের জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে দুর্যোগ মোকাবিলা করার আহ্বান জানিয়েছেন। বিএনপি একমাত্র দল যারা দেশের প্রতিটি দুঃসময়ে জনগণের পাশে থেকেছে এবং আছে।