খালেদার কিছু হলে দায় সরকারের: কামাল
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা গণফোরাম সভাপতি কামাল হোসেন বলেছেন, বিএনপিনেত্রীর কিছু তার দায় সরকারকেই নিতে হবে। তিনি অবিলম্বে খালেদার মুক্তি চেয়েছেন।
মঙ্গলবার সকালে ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির জরুরি বৈঠক শেষে এক সংবাদ ব্রিফিঙে কামাল হোসেন বলেন, বলেন, “অতি সম্প্রতি মিডিয়ায় প্রকাশিত তথ্যের আলোকে আমরা অবগত হয়েছি যে, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। তার স্বাস্থ্যের গুরুতর অবনতির কারণে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে আমরা গভীর উৎকন্ঠা ও উদ্বেগ প্রকাশ করছি।
“বেগম খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে টালবাহানার আমরা নিন্দা প্রকাশ করছি এবং বর্তমান অবস্থায় তার উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় আশু ব্যবস্থা গ্রহণসহ অবিলম্বে তার মুক্তির দাবি করছি। আমরা স্পষ্টভাষায় উল্লেখ করতে চাই, বেগম খালেদা জিয়ার যেকোনো অনভিপ্রেত ঘটনা হলে তার দায়-দায়িত্ব সম্পূর্ণ সরকারকেই বহন করতে হবে।”
দুর্নীতির দুই মামলায় সাজা নিয়ে কারাবন্দী খালেদা গত বছরের ১ এপ্রিল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।সেখানে তার সুচিকিৎসা হচ্ছে না- এমন অভিযোগ তুলে তাকে বিদেশে নিতে জামিনের দাবি জানিয়ে আসছে বিএনপি।
গত রোববার কয়েকজন স্বজন খালেদাকে দেখে আসার পর তাদের বরাত দিয়ে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব জানান, বিএপিনেত্রীর অবস্থা ‘গুরুতর’।
“আমাদের কাছে মেসেজ আছে যে, উনি (খালেদা জিয়া) জানিয়েছেন যে, উনার চিকিৎসা হচ্ছে না, উনি চিকিৎসা করতে চান উচ্চতর সেন্টারে,” বলেন ফখরুল।
ঐক্যফ্রন্টের ব্রিফিংয়ে কামাল হোসেন বলেন, খালেদা জিয়াকে জামিন না দেয়া সংবিধানের লঙ্ঘন।
“আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, উনাকে জামিন না দেয়া অবশ্যই সংবিধান লঙ্ঘন করা। উনার চিকিৎসার ব্যাপারে যেটা আমরা দাবি করছি, সেটা যদি না মেনে নেয়া হয় সেটা সংবিধান লঙ্ঘনের সামিল হবে।
“সংবিধান একটি মৌলিক আইন, সর্বোচ্চ আইন। সংবিধানের বাইরে কেউ না, সংবিধানের কর্তব্য পালন করতে সকলেই বাধ্য। তারা (সরকার) সংবিধান অমান্য করলে গুরুতর অপরাধের জন্য দায়ী হবেন যেটা আমি আশা করি, বিশ্বাস করি কেউ বুঝে-শুনে করবে না।”
সাংবাদিকদের প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ এই আইনজীবী বলেন, “আমিসহ আমরা সবাই আছি তার জামিনের ব্যাপারে, তার জামিনের ব্যাপারে আমাদের চেষ্টা অবশ্যই অব্যাহত থাকবে।”
খালেদার জামিনের পক্ষে দাঁড়াবেন কিনা প্রশ্ন করা হলে কামাল হোসেন বলেন, “অবশ্যই যে কারো প্রয়োজন হলে আমার পেশাগত কাজ, এটা আমি করব।”
সর্বোচ্চ আদালতে খালেদা জিয়ার জামিনে খারিজ হয়ে যাওয়ার পর আর কোনো সুযোগ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “অবশ্যই আছে। জামিন যতবার আমরা চাইতে পারি। রিভিউর ব্যাপার আছে, রিভিউ ছাড়া ফ্রেস অ্যাপ্লিকেশন করা যায়।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন কামাল।
মতিঝিলে কামাল হোসেনের চেম্বারে স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা আবদুল মঈন খান, গণফোরামের আবু সাইয়িদ, সুব্রত চৌধুরী, মহসিন রশিদ, মোশতাক আহমেদ, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, শহীদুল্লাহ কায়সার, মমিনুল হক, জাহিদ-উর রহমান, জেএসডির সিরাজ মিয়া, শহিদউদ্দিন মাহমুদ স্বপন, গণস্বাস্থ্য সংস্থার জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিকল্পধারার নূরুল আমিন ব্যাপারী, শাহ আহমেদ বাদল, ঐক্যফ্রন্টের জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু।