খালিশপুরে ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ, চিকিৎসক লাঞ্ছিত, আটক ২
দ: প্রতিবেদক
খুলনার খালিশপুর ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় রিপন হোসেন (২৪) নামে এক কলেজছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল রবিবার ভোর ৪টার দিকে তার মৃত্যু হয়। রিপন মুজগুন্নী এলাকার নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শওকত হোসেনের ছেলে। তিনি মহানগরীর সিটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অটোমোবাইল ডিপার্টমেন্টের সপ্তম সেমিস্টারের ছাত্র ছিলেন।
রিপনের চাচাতো ভাই ইয়াসিন বলেন, শনিবার দিবাগত রাতে হঠাৎ ফেটে ব্যথা ও গ্যাস্ট্রিকজনিত কারণে অসুস্থ হলে রিপনকে খালিশপুর ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। এসময় তাকে ২০ মিনিটে ১ লিটার ওজনের স্যালাইন পুশ করেন নার্সরা। এত দ্রুত স্যালাইন দেওয়া দেখে আমরা প্রথমে ডিউটি ডাক্তার সুজাউদ্দিন সোহাগের কাছে গিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনারা তো ডাক্তার না। বোঝবেন কি? তখন আমরা চুপ করে থাকি। পরে ভোর ৪টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে রিপেনর মৃত্যুর পর কর্তব্যরত চিকিৎসককে মারধোরের পর জোর করে খুমেক হাসপাতালে নিয়ে আসার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় খুমেক হাসপাতাল থেকে কায়েস ও কৌশিক নামে দুইজনকে আটক করেছে সোনাডাঙ্গা পুলিশ।
খালিশপুর ক্লিনিকের সত্বাধিকারী ডাঃ মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, রাত ১২টার পরে একটা রোগী আসে বুকে ব্যাথা নিয়ে। তাকে সম্ভাব্য সকল চিকিৎসা দেয়া হয়। চিকিৎসা চলাকালীন তার মৃত্যু হয়। কিন্তু হাসপাতালে সন্ত্রাসীরা কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ সুজাউদ্দিনকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে অস্ত্রের মুখে খুমেক হাসপতালে নিয়ে যায়। সে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অর্থপেডিক ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে।
সোনাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মমতাজুল হক বলেন, চিকিৎসককে লাঞ্ছিত ও জিম্মি করে খুমেক হাসপাতালে নিয়ে আসার জন্য কায়েস ও কৌশিক নামে দুই যুবককে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি।
অপরদিকে ক্লিনিক ভাঙচুর ও ডা. মো: সুজাউদ্দিন সোহাগকে কর্তব্যরত অবস্থায় বেধড়ক মারধোর, অস্ত্রের মুখে অপহরণ এবং প্রাণনাশের চেষ্টা করায় বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল প্র্যাক্টিশনার্স এসোসিয়েশন (বিপিএমপিএ) ও বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনাস্টিক ওনার্স এসোসিয়েশন (বিপিএইচসিডিওএ), খুলনা শাখা তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। উক্ত ঘটনায় পুলিশ প্রশাসনের প্রতি দ্রুত যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহণের আহŸান জানানো হয়।