কয়রায় কপোতাক্ষ নদের ঘাটখালি বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে এলাকা প্লাবিত
কয়রা প্রতিনিধি
দুভোর্গ যেন পিছু ছাড়ছেনা কয়রাবাসির নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে কয়রার কপোতাক্ষ নদের ঘাটখালি বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙনের কারণে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে এলাকা লোনা পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে চলতি বোরো মৌসুমের পাকা ধানা, মৎস্য ঘের ক্ষতির পাশাপাশি ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ভাঙ্গনরোধে কাজ করে কোন রকম পানি আটকানোর ব্যবস্থা করা হলেও জরুরী ভিত্তিতে কার্যক্ররি ব্যবস্থা গ্রহন না করা হলেও আতংক কাটছেনা এলাকাবাসির। শুধু ঘাটাখালী নয় অব্যাহত ভাঙনের কারণে কয়রা সদর ইউনিয়নের গোবরা, হরিনখোলা ও গোবরা পূর্বচক গ্রামের বাসিন্দারা রয়েছেন আতঙ্কে। ভাঙন রোধে অবিলম্বে ব্যবস্থা না নেয়া হলে নদীর তীরবর্তী জনপদের বিস্তির্ণী এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় ধ্বংস হওয়ার উপক্রম হয়েছে ১৩-১৪/২-নং পোল্ডারের গোবরা, ঘাটাখালী ও হরিনখোলার ভেড়িবাঁধ। গত রবিবার রাতের জোয়ারে ঘাটাখালী মসজিদ সংলগ্ন এলাকার বেড়িবাধ ভেঙ্গে হঠাৎ লবন পানিতে পুরো ঘাটাখালি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তাৎক্ষনিক এলাকাবাসি স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বাধ রক্ষায় কাজ করে পানি প্রবেশের হাত থেকে রেহাই পেলেও ভাঙ্গন আতংকে দিন কাটাচ্ছে এলাকবাসি। ঘাটাখালী গ্রামের হানিফ, খাদিজা বেগম, আত্তাফ শেখ, হাফিজুর রহমান, মুদি দোকানি তৈয়েব আলীসহ অনেকেই বলেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে ভেড়ি বাঁধের গোড়ার মাটিতে ধ্বস নেয়া বেড়েই চলেছে। হঠাৎ রবিবার রাতে মসজিদ সংলগ্ন বেড়িবাধ ভেঙ্গে এলাকা প্লাবিত হয়। যার ফলে চলতি বোরো মৌসুমের পাকা ধান ক্ষতির পাশপাশি মৎস্য ঘের তলিয়ে গিয়ে ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ইতিমধ্যে এলাকার অনেক মানুষ তাদের প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র সহ গবাদী পশু অন্যত্র সরিয়ে নিতে দেখা গেছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকার মানুষও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য আলহাজ্ব আঃ গফ্ফার ঢালী বলেন, ভাঙ্গনরোধে স্থানীয় এলাকাবাসি স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজ করছে। তিনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে দ্রæত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের আমাদী সেকশন কর্মকর্তা মশিউল আলম বলেন, ঘাটাখালী এলাকার বেড়িবাধ ভাঙ্গার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বাধ বাধার ব্যাপারে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
কয়রা সদর ইউনয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মোস্তফা নাজমুছ ছাদাত বলেন, ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেয়া না নেয়া হলে কয়রা সদরের দরিদ্র মানুষ বসতবাড়ীসহ ফসলী জমি হারিয়ে আরো নিঃস্ব হয়ে পড়বে। ইতিপূর্বে নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থদের অভিযোগ, প্রতি বছর নদী ভাঙন শুরু হলেই ভাঙন রোধের নামে সরকারি অর্থ লুটপাটের তোড়জোড় শুরু হয়। যা শুধুই অপচয় মাত্র।
স্থানীয়দের দাবি, নদীভাঙন রোধে টেকসই ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
কয়রা উপজেলা পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এস এম শফিকুল ইসলাম ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিমুল কুমার সাহা ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করে বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জনসাধারনের সহযোগিতায় বাঁধের কাজ চলমান রয়েছে। এ ব্যাপারে পাউবোর উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জরুরী ভিত্তিতে কার্যক্ররি ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বলা হয়েছে ।