ক্যাসিনোগুলো বিএনপি আমলেও ছিল, ব্যবস্থা নেয়নি: কাদের
রাজধানীর ফকিরাপুলে ইয়ংমেনস ক্লাবের মতো ক্যাসিনোগুলো বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় চললেও তারা ব্যবস্থা নেয়নি বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়কমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার ধানমণ্ডিতে দলীয় সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
এই সরকার ঢাকাকে ক্যাসিনোর শহর বানিয়েছে- বিএনপির এমন অভিযোগ নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কাদের বলেন, “ঢাকাকে ক্যাসিনোর শহর বানিয়েছে বিএনপি। তাদের সময় এই ক্যাসিনোগুলো ছিল। সে ক্যাসিনোর ব্যাপারে অ্যাকশন তো নেওয়া হচ্ছে।
“সরকারের প্রথম বছরেই কিন্তু অ্যাকশন নেওয়া হয়েছে। সময়তো এখন ফুরিয়ে যায়নি। এমন তো নয় যে, ইলেকশনকে সামনে রেখে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। প্রথম ৮-৯ মাসেই এসব ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে।”
গত শনিবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সংসদের বৈঠকে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ নিয়ে বিরক্তি প্রকাশের পর পদত্যাগ করেন ছাত্রলীগের দুই শীর্ষনেতা। ওই বৈঠকে যুবলীগের কয়েক নেতার কর্মকাণ্ডেও অসন্তোষ ঝরে তার কণ্ঠে।
এরপর যুবলীগের নেতাদের জুয়ার আখড়া চালানোর খবর চাউর হওয়ার মধ্যে বুধবার ঢাকায় চারটি ক্যাসিনোতে অভিযান চালায় র্যাব। গ্রেপ্তার করা হয় যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগেও যারা অপকর্ম করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন। দুর্নীতি, অপকর্ম ও শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য অনেকেই নজরদারিতে আছে; সময়মত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
“ক্যাসিনোকেন্দ্রিক যে অভিজান- এটা ঢালাওভাবে ছাত্রলীগ আর যুবলীগের বিরুদ্ধে নয়। ছাত্রলীগ-যুবলীগে বহু ত্যাগী নেতা-কর্মী আছে, তারা অনেক ভাল কাজও করছে। এখানে দূর্নীতি, অনিময়, বিশৃঙ্খলার সঙ্গে যারা জড়িত, যাদের অচরণে পার্টি এবং সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে, ঠিক তাদের বিরুদ্ধেই ‘কেইস টু কেইস’ খোঁজখবর নিয়ে অ্যাকশন নেওয়া হচ্ছে, আগেও নেওয়া হয়েছে।”
শেখ হাসিনার সরকার শুরু থেকেই দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর মনোভাব দেখিয়ে আসছে দাবি করে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, “এটা শুরু মুখের কথা নয়, আমরা অ্যাকশনেই দেখাচ্ছি।
“অতীতে বিএনপির মত বড় দল ক্ষমতায় ছিল। তারা তাদের দলের কোনো অপকর্ম, লুটপাট, দুর্নীতি, খুন নিয়ে অ্যাকশনে গেছে এমন কোনো উদাহরণ নেই। বিএনপি হয়তো বিষোদ্গার করছে, কিন্তু তারা তো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। বেগম জিয়া যা পারেননি, সেটা শেখ হাসিনা করছেন।”
সহযোগী সংগঠনের কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় আওয়ামী লীগ বিব্রত কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, “উই আর ভেরি হ্যাপী। আমাদের সরকারপ্রধানের ওপর আমরা খুব খুশি।
“তিনিই অ্যাকশন নিতে পারেন, কাজেই সরকার প্রধানের ইমেজ বাড়লে আমাদের পার্টিরও ইমেজ বাড়বে।”
বিএনপি নেতা শামসুজ্জামান দুদুর বক্তব্য প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি এটাকে বিচ্ছিন্ন বক্তব্য বলে মেনে নিতে পারছি না। কারণ বিএনপি নেতারা অতীতেও আমাদের নেত্রীকে হত্যা করা হবে, সরিয়ে দেওয়া হবে, বঙ্গবন্ধু যেই পথে গেছেন, শেখ হাসিনাও সেই পথে যাবেন, এ ধরনের বক্তব্য তারেক জিয়া থেকে বিএনপির অনেক নেতাই বিভিন্ন সময় মন্তব্য করেছেন।”