‘কোয়াডে’ যুক্ত হলে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নষ্ট হবে
ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেছেন, ‘কোয়াডে’ যুক্ত হলে বাংলাদেশ ও চীন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক যথেষ্ট নষ্ট হবে। তাই এতে বাংলাদেশের অংশ নেওয়া ঠিক হবে না।
সোমবার (১০ মে) ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত ডিক্যাব টক’য়ে অংশ নিয়ে চীনা রাষ্ট্রদূত এ কথা বলেন।
ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরে নৌ চলাচল ‘অবাধ ও স্বাধীন‘ রাখার উপায় খোঁজার যুক্তি দেখিয়ে ২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের মধ্যে ‘কোয়াড’ (কোয়াড্রল্যাটারাল সিকিওরিটি ডায়ালগ) সংলাপের সূচনা হয়। মূলত চীনকে ঠেকাতেই এই উদ্যোগ।
ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট ‘কোয়াডে’ বাংলাদেশ যুক্ত হলে বাংলাদেশ ও চীন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক যথেষ্ট নষ্ট হবে। তাই এতে বাংলাদেশের অংশ নেওয়া ঠিক হবে না।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ এখনই সম্ভব হচ্ছে না। বাংলাদেশও যোগাযোগ করতে পারছে না। পরিস্থিতি উন্নতির কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না৷ আমাদের ধৈর্য ধরা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। প্রত্যাবাসনে দ্রুত আমরা কোনো ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের সম্ভাবনা দেখছি না।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন সিনোভ্যাক ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রস্তাব দিলেও বাংলাদেশ জরুরি ভিত্তিতে এ টিকা পেতে এখনও অনুমতি দেয়নি। বাংলাদেশ শুধুমাত্র সিনোফার্মকে অনুমোদন দিয়েছে, তাই শিগগিরই সিনোভ্যাক ভ্যাকসিন পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
তিনি বলেন, জি টু জি কিংবা বাণিজ্যকভাবে চীন ও বাংলাদেশে টিকা দিতে প্রস্তুত। কিন্তু শুধুমাত্র সিনোফার্ম কোম্পানিকে বাংলাদেশ সরকার জরুরি অনুমতি দেওয়ায় লম্বা সিরিয়ালের জটিলতা তৈরি হয়েছে। তাও এ সিদ্ধান্ত নিতে বাংলাদেশ সময় নিয়েছে তিন মাস। ফলে এখন দ্রুত টিকা পাওয়ার সিরিয়ালে সামনে আসতে পারেনি বাংলাদেশ।
এক প্রশ্নের উত্তরে লি জিমিং বলেন, ‘তিস্তা রিভার কম্প্রিহেন্সিভ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রেস্টোরেশেন’ প্রজেক্টে ঋণ প্রস্তাব নিয়ে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি বলে জানান রাষ্ট্রদূত। ফিজিবিলিটি স্ট্যাডিজ এর রেজাল্ট পেলে এ বিষয়ে আলোচনা শুরু হতে পারে। তবে তিস্তা নিয়ে যে কোনো প্রকল্প করা বাংলাদেশের জনগণের অধিকার।
তিনি বলেন, করোনা মহামারি মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সহায়তা দেবে চীন। এ লক্ষ্যে পাঁচ লাখ সিনোফার্ম টিকা দেবে। এ টিকা আগামী ১২ মে বাংলাদেশে আসবে। কয়েকদিন আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ টিকার অনুমোদন দিয়েছে বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ডিকাব প্রেসিডেন্ট পান্থ রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মঈনুদ্দিন।