কোরবানির জন্য সুস্থ গরু চেনায় উপায়
আসছে কোরবানি ঈদ। সামর্থ্যবান মুসলমান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য পশু কোরবানি দেন। বাংলাদেশে কোরবানির জন্য অন্যতম জনপ্রিয় পশু গরু। ফলে এ সময় ব্যাপকভাবে গরুর চাহিদা বেড়ে যায়। ভালো গরু বাছতে, সুস্থ গরু পেতে ক্রেতারা এ সময় দুশ্চিন্তায় ভোগেন। সুস্থ-সবল গরু না চেনার ফলে অনেকে বিপাকে পড়েন। সুস্থ-সবল, মনের মতো ভালো গরু কীভাবে চিনবেন এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) বেশ কয়েকজন পশু বিশেষজ্ঞের সঙ্গে রাইজিংবিডির কথা হয়। তাদের কথার সারসংক্ষেপ নিচে উল্লেখ করা হলো :
১. সুস্থ গরুর প্রথম বৈশিষ্ট্য হলো গরুটি সচেতন থাকবে। লেজ দিয়ে মশা-মাছি তাড়াবে, আশপাশে মানুষের উপস্থিতি বুঝতে পারবে এবং এ সময় সে নড়ে উঠবে। মোদ্দাকথা মানুষের উপস্থিতে বুঝে গরু স্থির দাঁড়িয়ে থাকবে না। গায়ে হাত দিলে বা চিমটি দিলে গরু প্রতিক্রিয়া দেখাবে।
২. গরুর নাক শুকনা থাকবে। অর্থাৎ নাক দিয়ে পানি পড়বে না। তবে নাকের নিচের অংশ (ঠোঁটের উপর কালো অংশ) ভেজা ভেজা থাকবে।
৩. সুস্থ গরুর অন্যতম বৈশিষ্ট হলো জাবর কাটা। অনেকক্ষণ জাবর না-কাটলে সেই গরুর নানান সমস্যা আছে ধরে নিতে হবে। যেমন পেটে গ্যাস জমতে পারে।
৪. গরুর গায়ের লোম মসৃণ এবং উজ্জ্বল থাকবে। লোম খাড়া থাকবে না আবার একদম ভাঙাও থাকবে না।
৫. গরুর মুখ দিয়ে লালা পড়বে না। আমরা অনেক সময় দেখি দূর থেকে ট্রাকে গরু অনার কারণে লালা পড়ে। গরু যথেষ্ট বিশ্রাম পাওয়ার পরও লালা ঝরছে কিনা লক্ষ্য রাখতে হবে। অনেক সময় গরুর মুখে ঘা থাকতে পারে, কিংবা দুই পায়ের চিপায় ঘা থাকতে পারে- এসব ব্যাপার খেয়াল রাখতে হবে।
৬. স্বাভাবিকভাবে গরু শ্বাস-প্রশ্বাস নেবে। আপনি সেটা বুঝবেন না। শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় শরীর ওঠা-নামা করলে বুঝতে হবে সেই গরুর সমস্যা আছে। স্বাভাবিক অবস্থায় গরু মিনিটে ১৫-১৬ বার শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়।
৭. পেছনে গোবর লেগে থাকবে না। যদি পাতলা গোবর লেগে থাকে তবে গরুর পেটে সমস্যা রয়েছে বুঝতে হবে।
৮. গরুর পায়ের পেছনের মাংস চাপ দিয়ে দেখতে হবে কত দ্রুত স্বাভাবিক হচ্ছে। যদি দ্রুত স্বাভাবিক হয় তবে সমস্যা নেই। দ্রুত স্বাভাবিক না-হলে অর্থাৎ মাংস দেবে থাকলে সমস্যা।
৯. থার্মোমিটার দিয়ে গরুর তাপমাত্রা পরীক্ষা করতে হবে। তাপমাত্রা ১০১ ডিগ্রি থাকতে হবে। পায়ুপথে থার্মোমিটার ঢুকিয়ে এক মিনিট রেখে গরুর গায়ে বা চামড়ায় চেপে ধরলেই তাপমাত্রা পরীক্ষা করা যাবে।
বিষয়গুলো বলেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি সায়েন্সের ডিন, ডা. মো. মকবুল হোসেন, একই বিভাগের প্রফেসর ডা. ফরিদা ইয়াসমিন বারি, ড. একেএম আনিসুর রহমান