কোভিড-১৯: রোগীর চাপ বাড়ায় সঙ্কটে নয়া দিল্লি
ভারতের রাজধানীতে বাড়তে থাকা করোনাভাইরাস আক্রান্তদের ভিড়ে হাসপাতালগুলো উপচে পড়ছে, পর্যাপ্ত প্রয়োজনীয় সংখ্যক শয্যা না থাকার অভিযোগের মধ্যে পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
সমালোচকদের অভিযোগ, শপিং মলগুলো ও মন্দিরগুলো অতি তাড়াতাড়ি খুলে দেওয়া হয়েছে এবং পরিস্থিতি মোকাবেলায় রাজ্য সরকার তেমন কোনো প্রস্তুতি নেয়নি।
কোভিড-১৯ আক্রান্ত কিছু লোকের পরিবার জানিয়েছে, শয্যা খালি না থাকায় হাসপাতালগুলো তাদের ফিরিয়ে দিয়েছে ফলে অসুস্থ স্বজনদের ভর্তি করাতে পারছেন না তারা।
আবার যারা ভর্তি করাতে পারছেন তাদের অভিযোগ, সরকারি হাসপাতালগুলোর বারান্দায় রোগীদের ফেলে রাখা হয়েছে, তাদের দিকে কোনো মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে না।
মৃতদেহ হাসপাতালের লবিতে পড়ে আছে, স্থানীয় গণমাধমগুলোর এ ধরনের প্রতিবেদনের পর সর্বোচ্চ আদালত উদোগ নিয়ে এ বিষয়ে রাজ্য সরকারকে নির্দেশনা দেয় বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
“আমি মনে করি আক্রান্তের সংখ্যা এতো বাড়বে এমন ধারণাই আমাদের ছিল না, এতোটাই আত্মবিশ্বাসী ছিলাম আমরা,” পরিচয় না প্রকাশ করার অনুরোধ জানিয়ে রয়টার্সকে বলেন দিল্লির ক্ষমতাসীন আম আদমি পার্টির একজন বিধায়ক।
নগরীর সংক্রমণ পরিস্থিতির বিষয়ে মন্তব্যের জন্য অনুরোধ করা হলেও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং নগরীটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সাড়া দেয়নি বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থাটি।
এক মাসও হয়নি কেজরিওয়াল বলেছিলেন, লকডাউন কর্তৃপক্ষকে প্রস্তুতি নেয়ার যথেষ্ট সময় দিয়েছে তাই করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার জন্য নগরীর হাসপাতালগুলোকে প্রয়োজন অনুযায়ী প্রস্তুত করা গেছে।
“দিল্লি জিতবে, করোনাভাইরাস হারবে,” তখন বলেছিলেন তিনি।
ওই সময় দিল্লিতে নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজারের মতো ছিল, কিন্তু এখন সংখ্যাটি ৪৩ হাজার ছুঁইছুঁই করছে।
ভারতে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা তিন লাখ ৪৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে, মুম্বাই ও চেন্নাইয়ের মতো শহরগুলোতে সংক্রমণের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।
দিল্লিতেও সংক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। জুলাইয়ে শেষ দিকে নগরীটিতে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ লাখ ৫০ হাজার জনে দাঁড়াতে পারে বলে সরকারি হিসাবগুলোতে বলা হয়েছে। যা বর্তমান সংখ্যার ১৩ গুণ বেশি আর ওই সময় রোগীদের চিকিৎসার জন্য দেড় লাখ শয্যার প্রয়োজন হবে।
সোমবার সরকারি মোবাইল অ্যাপে দেখা গেছে, দিল্লির কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য এখন নয় হাজার ৯৪০টি শয্যা আছে, এর মধ্যে পাঁচ হাজার ৫০০ শয্যায় রোগী ভর্তি আছেন। অ্যাপে তালিকাভুক্ত ১০৮টি সরকারি ও প্রাইভেট হাসপাতালের মধ্যে ২৫টিতে কোনো শয্যা খালি নেই।
সর্বোচ্চ আদালতের কড়া নির্দেশনার পর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, রাজধানীর আক্রান্তদের জন্য রেলওয়ের ৫০০টি বগিকে কোভিড-১৯ কেয়ারে সেন্টারে রূপান্তর করে দিবে তারা।