কে হচ্ছেন ২২তম রাষ্ট্রপতি জানা যাবে সন্ধ্যায়
দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি কে হচ্ছেন সেটা নিয়ে জনমনে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। কেননা নতুন রাষ্ট্রপ্রধানের অধীনেই হবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অপেক্ষার পালা শেষ হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় জানা যাবে কে হচ্ছেন পরবর্তী রাষ্ট্রপতি। এদিন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানেই চূড়ান্ত করা হবে আগামী পাঁচ বছরের জন্য বঙ্গভবনে কে যাচ্ছেন।
আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সপ্তম সভা মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সংসদ ভবনের লেভেল ৯-এ সরকারি দলের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দলের সংসদীয় দলের সেক্রেটারি ও জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী আওয়ামী লীগ দলীয় এমপিদের যথাসময়ে সভায় উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন।
জাতীয় সংসদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় আওয়ামী লীগ যাকে মনোনয়ন দেবে তিনিই হবেন রাষ্ট্রপতি। আবদুল হামিদ যেভাবে বিগত দুটি নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, এমন একজনকেই এই পদে আনতে চায় ক্ষমতাসীন দলটি। আর বর্তমান সংসদে যেহেতু বিএনপি নেই, আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং এমপিদের দলের বাইরে ভোট দেওয়ার বিধান নেই, তাই সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের মনোনীত প্রার্থীই হতে চলেছেন পরবর্তী রাষ্ট্রপতি। এই সমীকরণে সবার দৃষ্টি মঙ্গলবারের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের দিকে।
আগামী ২৪ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হবে। এজন্য ১৯ ফেব্রুয়ারি দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ লক্ষ্যে ১২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশনে রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। পরের দিন ১৩ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে। একাধিক প্রার্থী থাকলে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে ভোট গ্রহণ হবে। সংসদ সদস্যরা ভোট দিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করবেন।
সংবিধান অনুযায়ী, সংসদ সদস্যরা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য প্রার্থীকে ভোট দেবেন। আর রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থীর সমর্থক ও প্রস্তাবক হতে হয় সংসদ সদস্যদের। বিরোধী দল জাতীয় পার্টি প্রার্থী দেবেন না বলে এরইমধ্যে জানিয়েছে। মঙ্গলবারই আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করার পাশাপাশি প্রস্তাবক ও সমর্থক কারা হবেন, সেটাও চূড়ান্ত করা হবে বলে জানা গেছে।
গত ৫ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদের ২১তম অধিবেশন শুরু হলে ওইদিন বিকেলে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ভাষণ দেন। সেটি ছিল রাষ্ট্রপতি হিসেবে তার সংসদ অধিবেশনে দেওয়া শেষ ভাষণ। রাজনৈতিক অঙ্গনে কয়েকদিন ধরেই আলোচনা শিরীন শারমিনকে নিয়ে। অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হিসেবে অভিনন্দন জানিয়েছেন। অভিনন্দন জানালেও এ বিষয়ে কেউ কোনো সূত্র প্রকাশ করেননি। অনেকেই মনে করছেন, যেহেতু সাবেক ও বর্তমান মিলিয়ে চারজন রাষ্ট্রপতি সাবেক স্পিকার, তাই দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হতে পারেন বর্তমান স্পিকারও। শিরীন শারমিন রাষ্ট্রপতি হলে তিনিই হবেন দেশের প্রথম কোনো নারী রাষ্ট্রপতি।
প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানই পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হতে যাচ্ছেন এমন গুঞ্জনও রয়েছে বিভিন্ন মহলে। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি খায়রুল হক একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তি। তিনি অনেকগুলো যুগান্তকারী এবং ঐতিহাসিক রায় দেওয়ার কারণে বেশ আলোচিত। রাষ্ট্রপতি হিসেবে তার নামও ব্যাপক আলোচনায় আসছে। সেই সাথে প্রবীণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকের নাম আছে অনেকের মুখে। রাষ্ট্রপতি পদে আরেক আলোচিত ব্যক্তি একুশে পদকপ্রাপ্ত সমাজবিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন। তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর একজন সদস্য।
এদিকে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরীকেও রাষ্ট্রপতি পদে আলোচনায় রাখা হয়েছিল। তবে গত ১২ জানুয়ারি জাতীয় সংসদের সংসদ উপনেতা হন তিনি। এতে তার রাষ্ট্রপতি হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়েছে। কিছুদিন আগেও আলোচনায় ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তবে ১২ জানুয়ারি এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ওই পদে যাওয়ার যোগ্যতা আমার নেই। তবে জল্পনা-কল্পনা অবসান দেখতে মুখিয়ে সবাই।