কুয়েট শিক্ষক মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা, সিদ্ধান্ত সিন্ডিকেটে
দ. প্রতিবেদক
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষক ড. মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গতকাল মঙ্গলবার বিকেল চারটার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেনের কাছে ৪৮ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদন জমা দেয়। তবে প্রতিবেদনে কী আছে তা নিয়ে মুখ খুলছেন না সংশ্লিষ্ট কেউই।
এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, তারা উপাচার্যের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। তবে প্রতিবেদনে কী আছে তা তিনি বলবেন না। বিষয়টি কুয়েট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জানতে হবে।
কুয়েটের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আনিসুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, এ বিষয়ে এখনই কিছু বলতে পারবো না। কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন মোবাইল কল রিসিভ করেননি।
এদিকে কুয়েটের জনসংযোগ ও তথ্য শাখার মুখপাত্র রবিউল ইসলাম সোহাগ বলেন, শিগগিরই তদন্ত প্রতিবেদন কুয়েটের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় উত্থাপন করা হবে। এরপর তা সিন্ডিকেট সভায় উত্থাপন করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তবে তদন্ত কমিটির একজন সদস্য জানান, যারা অভিযুক্ত, অভিযুক্ত ছাড়া প্রত্যক্ষদর্শী এবং সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়ে বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। কমিটির সদস্যরা ড. সেলিমের পরিবারের সঙ্গেও কথা বলেছেন। সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
কুয়েটের শিক্ষকরা বলেন, ‘কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান তার মনোনীত ছাত্রকে লালন শাহ হলের ডাইনিং ম্যানেজার নিযুক্ত করার জন্য হলের প্রভোস্ট ড. সেলিমকে চাপ প্রয়োগ করছিলেন। গত ৩০ নভেম্বর সেজান ৪০-৪২ জন নেতাকর্মীকে নিয়ে আবারও ড. সেলিমকে চাপ প্রয়োগ এবং তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এই চাপ সহ্য করতে না পেরে বাসায় গিয়ে হার্ট অ্যাটাকে ড. সেলিমের মৃত্যু হয়।’
এর প্রতিবাদে গত ১ ডিসেম্বর থেকে ক্লাস বর্জন শুরু করে শিক্ষক সমিতি। এছাড়া ছাত্রলীগ ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা পাল্টাপাল্টি আন্দোলনে নামায় ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় গত ৩ ডিসেম্বর সিন্ডিকেট সভায় কুয়েট বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এছাড়া ওই দিন ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল।
অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক সত্যতা মেলায় গত ৩ ডিসেম্বর ছাত্রলীগ নেতা সেজানসহ ৯ ছাত্রকে কুয়েট থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। কুয়েট সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কুয়েটের হল খুলবে আগামী ৭ জানুয়ারি এবং ক্লাস শুরু হবে আগামী ৯ জানুয়ারি থেকে।