কুমড়ার ডালের বড়ি তৈরি করতে ব্যস্ত ঝিনাইদহরে বধূরা
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
বাংলাদেশ ছয়টি ঋতুর দেশ। ছয়টি ঋতুর মধ্যে শীতকাল অন্যতম। রসনা বিলাসীদের মধ্যে এই মৌসুমীতে অনেক কিছুরই সমারহ ঘটে। গ্রাম বাংলার বধুরা শীতের আগমনী বার্তার সাথে সাথে চিরচেনা ডালের বড়ি তৈরি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে গ্রামের বধুরা। শহরে আবির্ভাব না হলেও গ্রামে চোখে পড়ে অহরহ। এসেছে শীতকাল। বার্তার সাথে সাথে গ্রামের মহিলারা পারিবারিক কাজের ফাঁকে ফাঁকে বড়ি তৈরি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। শীতের সাথে যেন বড়ি দেওয়ার একটা রেওয়াজ প্রাচীন কাল থেকে চলে আসছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের মহিলারা সূর্য উদায়ের সাথে সাথে ঢেউ টিনের উপর চার“র উপর ও কাপড়ের উপর বড়ি দেওয়া দেখা যাচ্ছে। বড়ি তৈরি করতে যে সব উপকরণ ব্যবহার করা হয় এ বিষয়ে কথা হয় লাবনী রহমান এর সাথে।
তিনি জানান- কলাইয়ের ডাল, কুমড়া, পেঁপে, মুলা, কচু, প্রভৃতি বড়ি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। কলাইয়ের ডাল পানিতে আগের দিন ভিজিয়ে রাখতে হয়। তারপর গ্রামের বধূরা মিলে ঢেঁকিতে ও পাটায় গুরা করে আটার মত করতে হয়। বর্তমানে গ্রামে প্রাচীনকালের ঢেঁকি বিলুপ্ত হওয়ায় তারা এখন ডিজিটাল যুগে ম্যাশিনের দ্বারা বড়ি তৈরিতে উপযোগী করা হয়। তার পর ছোট ছোট করে টিনে চারোই শুকনা কাপড়ের উপর দিয়ে রোদে শুকাতে হয়ে তিন থেকে চারদিন। শুকনার পর বাঙ্গালীরা তাদের রসনা বিলাসের জন্য তরকারীতে মিশিয়ে খেতে হয়। শীতে বিভিন্ন খাবারের সাথে বড়ির স্বাদটা অন্যরকম। বিষয়খালী গ্রামের জহুরা বেগম (৮৫) জানালেন- বড়ি তৈরির আবির্ভাব কবে ঘটেছে তার সঠিক তথ্য জানা অসম্ভব হয়েছে।
বিষয়খালী বাজারের মুদি ব্যবসায়ী শওকত আলী জানান- শীত পড়ার সাথে সাথে বড়ি তৈরির কারিগররা ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। বর্তমানে ডাল ৮০ থেকে ৯০ দরে বিক্রি হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের মেধাবী ছাত্র প্রবীর কুমার জানান- বড়ি প্রাচীন কাল থেকে আমাদের সমাজে ব্যবহার হয়ে আসছে। বাঙালীদের এই মুখোরোচক বড়ি বিদেশীদেরও আকৃষ্ঠ করেছে।
আরপপুরের ময়না খাতুন জানান, চাকুরী শেষে বৃহস্পতিবার বিকালে এসে ডাল ধুয়ে পাটায় করে মধ্যে রাত পর্যন্ত বেটে শুক্রবার সকালে নিজ হাতে চার“র উপর ও কাপড়ের উপর বড়ি দিয়ে আসছি প্রতিবছর।পাটায় বেটে বড়ি দেওয়ার সাদই আলাদা। বড়ি খুবই সু স্বাদু হয়।