কিশোরীকে ধর্ষণের দায়ে ভণ্ড ফকিরের যাবজ্জীবন
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
বরিশালে বাকেরগঞ্জে স্বাস্থ্য ভালো করার চিকিৎসার প্রলোভন দেখিয়ে এক কিশোরীকে (১৫) ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ভণ্ড ফকির ইউনুছ হাওলাদারকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আসামিকে ১ লাখ টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ১ বছরের সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আবু শামীম আজাদ আসামির অনুপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে এই রায় ঘোষণা করেন। দন্ডপ্রাপ্ত ভণ্ড ফকির ইউনুছ ওই উপজেলার বারঘরিয়া এলাকার মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে।
সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারি আজিবর রহমান জানান, ওই উপজেলার একই এলাকায় বসবাসের সুবাদে ওই কিশোরীর সাথে ইউনুছ হাওলাদারের স্ত্রী আলেয়া বেগমের পূর্ব পরিচয় ছিল। কিশোরীর স্বাস্থ্য ভালো না থাকায় আলেয়া তার স্বামী ইউনুছের চিকিৎসা নিতে তাকে প্রলুব্ধ করে। ঘটনার এক মাস পূর্বে আলেয়ার কথামতো ওই কিশোরী ইউনুছের কাছে যায়। ইউনুস কিশোরীকে জানায় তাকে বান মারা হয়েছে। ১ মাস চিকিৎসা নিলে সে ভালো হয়ে যাবে। পরে ইউনুছ রাতে ওই কিশোরীর বাসায় গিয়ে ওষুধ দিয়ে আসতো।
২০১০ সালের ৩০ জুলাই রাতে ইউনুছ কিশোরীর বাড়িতে গিয়ে তাকে দরজা খুলতে বলে। কিশোরী দরজা খুললে ইউনুছ তাকে ওষুধ দেয়। ওষুধ খেয়ে কিশোরী অজ্ঞানের মতো হয়ে পড়লে ইউনুছ তাকে ধর্ষণ করে। এরপর ওষুধ দেয়ার অজুহাতে সে প্রায়ই কিশোরীকে ধর্ষণ করত। এতে কিশোরী অন্তঃস্বত্বা হয়ে পড়লে ইউনুছ ও তার স্ত্রী আলেয়া তার গর্ভ নষ্ট করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। কিশোরী বিষয়টি অভিভাবকদের জানালে তারা স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।
এ ঘটনায় ওই কিশোরী ফকির ইউনুছ হাওলাদার ও তার স্ত্রী আলেয়া বেগমকে অভিযুক্ত করে ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন। ট্রাইব্যুনাল মামলা তদন্তের জন্য বাকেরগঞ্জ থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। একই বছর ২ ডিসেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা এসআই হুমায়ুন কবির মামলার আসামি হিসেবে ইউনুছ হাওলাদারেকে অভিযুক্ত ও আলেয়া বেগমকে অব্যাহতি ট্রাইব্যুনালে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। পরে ট্রাইব্যুনালে ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ওই রায় ঘোষণা করেন বিচারক।