কিট ব্যবহারের সাময়িক অনুমোদন চায় গণস্বাস্থ্য
করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরীক্ষায় নিজেদের উদ্ভাবিত জিআর কোভিড-১৯ ডট ব্লট র্যাপিড টেস্ট কিট ব্যবহারে সরকারের কাছে সাময়িক অনুমোদন চেয়েছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।
সোমবার গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে এই কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষার অনুমতি মিললেও এখন তা ‘বাস্তবায়নের গতি ধীর’।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, এমন অবস্থায় কার্যকারিতা পরীক্ষা চলাকালীন সময় পর্যন্ত রোগীদের কোভিড-১৯ নির্ণয়ে এই কিট ব্যবহার করতে চান তারা।
“আমরা সরকারের কাছে আবেদন জানাই, যতদিন পর্যন্ত এই কার্যকারিতা পরীক্ষাটা না হয়, রিপোর্ট না আসে ততদিন আমাদের একটা সাময়িক সনদপত্র দেন। যাতে কেউ কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছে কি হয়নি অন্তত সেই পরীক্ষাটা করে দিতে পারি। এখন যদি আমরা শুরু করি তাহলে উনারা বলবেন, আমরা নিয়মনীতি মানি না। এ কারণে বিষয়টি বিবেচনা করা যায় কি না বিষয়টি সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।”
সংবাদ সম্মেলনে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী জানান, তারা এখনও পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কিট পৌঁছাতে পারেননি। কিট পৌঁছে দেওয়ার চিঠি তারা এখনও পাননি।
তিনি বলেন, কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য গঠিত কমিটি তাদের জানিয়েছেন তারা প্রস্তুত আছেন। এ সংক্রান্ত চিঠি উপাচার্যের কার্যালয়ে আছে।
“উনার চূড়ান্ত অনুমোদন হলে কমিটি আমাদের জানাবেন, আমরা তাদেরকে কিট দেব।”
২৯ এপ্রিল গণস্বাস্থ্যের উদ্ভাবিত র্যাপিড টেস্ট কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষার অনুমোদন দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। ওই দিনই এ সংক্রান্ত একটি চিঠি গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং আইসিডিডিআর,বির নির্বাহী পরিচালকের কাছে পাঠানো হয়।
কার্যকারিতা পরীক্ষা হওয়ার কথা রয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। এজন্য একটি কমিটিও গঠন করে দেওয়া হয়েছে।
করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য জিআর কোভিড-১৯ ডট ব্লট র্যাপিড টেস্ট কিট তৈরি করেছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, তবে এর কার্যকারিতার পরীক্ষা এখনও হয়নি।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ওই কমিটিকে ‘পূর্ণ ক্ষমতা দেওয়া হয়নি’।“তারা আমাদের চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, তারা রেডি আছেন। কিন্তু উপাচার্যের অনুমতি মেলেনি। চিঠি ভাইস চ্যান্সেলরের অফিসে গেছে। তিনি দেখবেন, সাইন করবেন, জানাবেন। এই কাহিনী রোজই দেখছি।”
এ সময় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পক্ষ থেকে দেশবাসীর কাছে ‘ক্ষমা’ চান জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
“আমরা ক্ষমা চাইছি আমাদের অপারগতার জন্য। আমাদের কাছে কিট আছে, আমরা দাবি করছি এটা কার্যকর। কিন্তু আমরা সরকারের অনুমোদনের ধাপ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারিনি। আমরা এই কঠিন সময়ে হয়ত গুরুত্বটাই বোঝাতে পারছি না কাউকে,” বলেন তিনি।
ডা. জাফরুল্লাহর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, “উনার অভিযোগ উনি করতেই পারেন। উনি এ ধরনের অভিযোগ কেন করেছেন সেটা তিনিই ভালো জানেন।”
ডা. কনক কান্তি বলেন, এই কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা শেষ করতে হলে কিছু নিয়মকানুনের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। এজন্য সময় লাগবে।
“এই কাজটি করার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় যে কমিটি করে দিয়েছে তাদের ওপর আমি কোনো নিয়ন্ত্রণ করছি না। আমার বিশ্বাস তারা তাদের মতো করে কাজ করছে। প্রক্রিয়াটি শেষ করতে যেভাবে এগোতে হয় তারা সেভাবে এগোচ্ছে। তারা প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে।
“তবে এ ধরনের অভিযোগ আনলে যারা এর সঙ্গে জড়িত তারা নিরুৎসাহিত হয়। কোনো কথাবার্তা নেই হঠাৎ করে আমাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ সঠিক না। আর আমরা কোনো পলিটিক্যাল পার্টি না।”