কিউলেক্স মশার উপদ্রব, শঙ্কা বাড়ছে ডেঙ্গু নিয়েও
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
গত বছর ভয়াবহ রূপ নেয়া ডেঙ্গুর প্রকোপ রাজধানীতে কমেছে। তবে কমেনি মশার উপদ্রব। নগরবাসী বর্তমানে কিউলেক্স মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ। ফলে আশঙ্কা বাড়ছে ডেঙ্গুর জন্য দায়ী এডিস মশা নিয়েও। তবে সামর্থ্য অনুযায়ী পূর্ব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।
তবে নাগরবাসী মশা নিধনে সিটি করপোরেশনের কোনো কর্মকাÐ দেখছেন না বলে অভিযোগ করেছেন। তাদের দাবি, মাঝে মধ্যে ওষুধ ছিটানো হয়, রাস্তায় ধোঁয়া ওড়ানো হয়, এগুলো আসলে লোক দেখানো ছাড়া আর কিছুই নয়।
গেল বছর ডেঙ্গুর প্রকোপে অতিষ্ঠ ছিল রাজধানীসহ পুরো দেশবাসী। এবার আগেভাগেই মশার ঘনত্ব বেড়ে যাওয়ায় আগামী বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কায় আছেন সবাই। বাসাবাড়ি, রাস্তাঘাট, পার্ক উদ্যান বা মাঠ কোথাও মশার যন্ত্রণায় শান্তিমতো একটু বসার উপায় নেই কারও।
কীটতত্ত্ববিদেরা বলছেন, এখন নগরে মূলত কিউলেক্স মশার উপদ্রব চলছে। স্ত্রী কিউলেক্স মশার মাধ্যমে অসুস্থ ব্যক্তির শরীর থেকে সুস্থ ব্যক্তির শরীরে ফাইলেরিয়া সংক্রমণ হতে পারে। ‘গোদ’ নামে পরিচিত এই রোগের কারণে হাত-পা ফুলে যায়। বারবার জ্বর হয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে মশার যে প্রকোপ তা মূলত কিউলেক্স মশার জন্য। আর এরজন্য আবহাওয়াকেও দায়ী করছেন অনেকে। তবে কারণ যাই হোক, নিজেদের সাধ্যমত মশা নিয়ন্ত্রণে কাজ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন।
মশা নিধনে বছরব্যাপী পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ডিসেম্বরের দিকে মশা বেশ নিয়ন্ত্রণে ছিল। জানুয়ারিতে এসে এর প্রকোপ বেড়েছে। এরজন্য আবহাওয়া অনেকখানি দায়ী। তবে মশা নিয়ন্ত্রণে আমরা বছরব্যাপী পরিকল্পনা নিয়েছি এবং সেই অনুযায়ী কাজ করছি।
এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে একটি সার্ভে প্রতিবেদন এসেছে আমাদের কাছে। সেখানে ডিএনসিসির ১, ১২, ১৬, ২০ এবং ৩১ নম্বর ওয়ার্ডকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করা হয়েছে। আমরা এগুলোকে ‘প্রায়োরিটি’ দিয়ে কাজ করব। তারপর আমরা আবার একটা সার্ভে করব। স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাথে মিলেও করা যায় কি না সেটাও ভাবছি। সেই সার্ভে রিপোর্টে আমরা বুঝব যে, পরিস্থিতির উন্নতি হল কি না। প্রতিবেদন বুঝে আবার কাজ করব।’
কীটতত্ত¡বীদরা বলেন, ‘বৃষ্টি হলে কিউলেক্স মশা কমে যাবে। তবে এডিস মশা বাড়বে। এটা স্বাভাবিক চিত্র। সিটি করপোরেশনগুলো এখন যেভাবে কাজ করছে তাতে তারা আগের যে কোন সময়ের থেকে অনেক বেশি প্রস্তুত। তবে তাদের কাজে দেখা যায় এক সপ্তাহ বা দুই সপ্তাহব্যাপী কাজের প্রবণতা থাকে। এমনটা করলে চলবে না। দীর্ঘ মেয়াদে পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করতে হবে। আর কাজের পর ফলাফল পর্যালোচনা করতে হবে। একই সাথে মশার প্রজননস্থল ধ্বংসের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। এর সাথে ফগিং যোগ করলে প্রজনননস্থলের বাইরে যে মশা আছে সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।’