November 26, 2024
জাতীয়লেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

কাশিমপুর জেল থেকে পালালো যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি

* প্রধান কারারক্ষীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
* ৬ কারারক্ষী সাময়িক বরখাস্ত, তদন্তে কমিটি

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি যাবজ্জীবন সাজার এক কয়েদি পালিয়ে গেছেন। আবু বকর সিদ্দিক (৩৫) নামের ওই কয়েদি কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এ ছিলেন। তিনি সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার চন্ডিপুর এলাকার তেথের আলী গাইনের ছেলে। আবু বক্কর সিদ্দিক হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হিসেবে কারাগারে বন্দী ছিলেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অন্য কয়েদিদের লকআপের পর সেখানে তাকে পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ থেকে হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি পালানোর ঘটনায় ৫ জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। এছাড়া ছয় জনকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
যাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে তারা হলেন-সর্ব প্রধান কারারক্ষী আবুল কালাম আজাদ, সহকারী প্রধান কারারক্ষী আ. রউফ খান, কারারক্ষী ইউসুফ খান, রাকিবুল হাসান, শওকত আলী। যারা বরখাস্ত হয়েছেন-সহকারী প্রধান কারারক্ষী আহাম্মদ আলী, কারারক্ষী হক মিয়া, মনিরুল ইসলাম, আলী নূর, সজিব হোসাইন, আনোয়ার হোসেন।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে ৫ জনকে আসামি করে মামলা করে কারা কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিকেলে আইজি প্রিজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম মোস্তফা কামাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, কয়েদি পালানোর ঘটনায় ডিআইজি প্রিজনসহ তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে এ ঘটনায় কাশিমপুরের জেল সুপার, জেলারসহ ছয়জনকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়েছে।
কাশিমপুর-২ কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার জাহানারা বেগম জানান, আবু বকর সিদ্দিকের বাড়ি সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায়, বাবার নাম তেছের আলী গাইন। ২০১১ সালের ১৫ জুন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ফাঁসির আসামি হিসেবে তিনি কশিমপুরে আসেন। ২০১২ সালের ২৭ জুলাই তার সাজা সংশোধন করে যাবজ্জীবন দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বন্দিদের গণনাকালে তাকে পাওয়া যায়নি। ২০১৫ সালেও ওই কয়েদি একবার কারাগার চত্বরে পালিয়ে ছিলেন। পরে কারাগারের ভেতরে এক সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে তাকে বের করা হয়।
কাশিমপুর কারাগারের একজন কমর্কতা জানান, ২০১৫ সালের ১৩ মে সন্ধ্যায় আত্মগোপন করে সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে লুকিয়ে ছিলেন আবু বকর। পরদিন তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়। এরপর কিছুদিন তাকে কারাগারে শেকল পরিয়ে রাখা হত, পরে শেকলমুক্ত করে দেওয়া হয়। কারা চত্বরে অন্য বন্দিদের সঙ্গেই তিনি কাজ-কর্ম করতেন।
বৃহস্পতিবারও অন্যদের সঙ্গে মুক্ত ছিলেন আবুবকর। সন্ধ্যায় বন্দিদের গনণার সময় তার উধাও হওয়ার বিষয়টি বোঝা যায়। পরে কারাগারের ৬টি ভবনের ২৪টি কক্ষে তার খোঁজ না পেয়ে সকল বন্দিদের রোলকল হয়। আবু বকরের নিখোঁজ থাকার বিষয়ে আমরা তখন নিশ্চিত হই। কারাগারের দেয়ালে থাকা আগাছা পরিষ্কার ও রঙ করার কাজে ব্যবহৃত মই দিয়ে আবু বকর পালিয়েছেন কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে একজন কারা কর্মকর্তা জানান।
গাজীপুর মেট্রোপলিটনের কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদ হোসেন জানান, কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ওই কয়েদির বিরুদ্ধে বিকেলে মামলা দায়ের করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে এবং আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *