কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে কপিলমুনির রায় সাহেব প্রতিষ্ঠিত পাবলিক স্টেডিয়াম
জি এম এমদাদ, কপিলমুনি
কপিলমুনিতে একের পর এক ধ্বংস হচ্ছে আধুনিক কপিলমুনির রুপকার স্বর্গীয় রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধুর জনস্বার্থে উৎসর্গ অনন্য সব সৃষ্টি। সহচরী সরোবর (নুনদার পুকুর) ২০০৪ সালে ধ্বংস হলেও আশির দশকে তার সৃষ্টির ধ্বংস যজ্ঞ শুরু হয়।
কপিলমুনি পাবলিক স্টেডিয়াম তারই এক নির্মম উদাহরণ। অত্যান্ত দুরদর্শী দানবীর রায় সাহেব এ অঞ্চলের যুবকদের নৈতিক চরিত্র গঠন, শরীর চর্চা ও ক্রীড়ামোদীদের মনের খোরাক মেটানোর জন্য তিনি ১৯৪০ সালে কপিলমুনি পাবলিক স্টেডিয়াম নির্মান করেন বর্তমান সেখানে কপিলমুনি পুঁলিশ ফাঁড়ি। প্রায় দেড় একর জমি ক্রয় করে তার চারি পাশে প্রাচীর নির্মান করে উন্মুক্ত পাবলিক স্টেডিয়াম নির্মান করেন। স্টেডিয়াম নির্মানের পর সেখানে বড় বড় খেলার আসর বসতো।
জানাযায়, স্টেডিয়ামটিতে দেশের নাম করা অনেক ক্লাবের খ্যাতিম্যান খেলোয়াড়রা এখানে এসে তাদের ক্রীড়া শৈলী প্রদর্শন করে গেছেন। এ স্টেডিয়ামে শুধু ফুটবল আর ক্রিকেট খেলার মধ্যে নয় এখানে হাডুডু, কাবাডি লবনদাঁড়ীসহ বলাকা সংগের আয়োজনে ৭২ ঘন্টা অবিররাম সাইকেল রেঞ্জসহ নানা খেলার প্রতিযোগীতা চলতো। আর কপিলমুনির মহা বারুনী মেলায় এখানে সার্কাস, যাত্রাসহ রকমারি মিষ্টান্নর পসরা বসতো। এ অঞ্চলের যুবকদের বিনোদনের একটি মাত্র জায়গা ছিল স্টেডিয়ামটি। প্রতিদিন ভোরের প্রথম আলোয় কিশোর যুবকদের খোলাধুলায় স্টেডিয়ামটি যেমন সরব হতো তেমনি বিকাল বেলায়ও খেলোয়াড় আর দর্শককের উপস্থিতিতে হতো প্রানবন্ত। কিন্তু এ ধারা বিগত ৪৩ বছর ধরে চলেলও ১৯৮৩ সালে তা ছেদ করা হয়। তখন থেকে স্টেডিয়ামটি ধ্বঃস যজ্ঞ শুরু হয়ে ২০০১ সালের শেষের দিকে শেষ হয়। যেখানে এ সময় ছিল খেলোয়াড়দের চার ছক্কা আর গোল করার প্রতিযোগীতা সেখানে এখন সুউচ্চ ভবন করার প্রতিযোগীতা। স্টেডিয়ামের শতভাগ জুড়ে কপিলমুনি পুলিশ ফাঁড়ি সহ নানা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। কিভাবে এটা সম্ভব হলো সাধারন মানুষ সেটা বলতে পারেনা। তবে একটি শক্তিশালী দানব চক্রের ভয়ংকর ছোবলে স্টেডিয়ামটি লন্ড ভন্ড হয়েছে বলে জানা যায়। বিনোদনের জায়গার অভাবে এ অঞ্চলের শত শত যুবক আজ বিপদগামী হচ্ছে। স্টেডিয়ামটি থাকলে খেলাধুলায় মনোনিবেশ হতো এলাকার যুবকরা এত আর অধঃপতনে যেতনা দুঃখের সাথে এমনটি জানালেন কপিলমুনি সহচরী বিদ্যা মন্দির স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ক্রীয়ামোদি ব্যক্তিত্ব হরে কৃষ্ণ দাশ। তিনি আরো জানান, সময়ের প্রয়োজনে কপিলমুনিতে একটি পাবলিক স্টেডিয়াম দরকার। কপিলমুনিতে ও তার আশে পাশে অনেক খাস জমিতে যদি একটি পাবলিক স্টেডিয়াম করা যায় তাহলে এ অঞ্চল অতিতের মত খেলাধুলায় অবদান রাখতে সক্ষম হবে। যুবকরা নৈতিক অবক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা পাবে।
কপিলমুনি বনিক সমিতির সাবেক সভাপতি দ্বীজেন সাধু বলেন, ‘রায় সাহেবের জনহিতকর সৃষ্টিকে ধঃস করা মানে তাঁকে অপমান করার সামিল। রায় সাহেবের আর কোন অনন্য সৃষ্টি যেন ধ্বংস না হয় সে জন্য আমাদের সকলকে সজাগ থাকতে হবে।’