কানাডায় বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ১৬
কানাডায় পুলিশের পোশাক পরা এক বন্দুকধারীর গুলিতে এক নারী পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছেন।
শনিবার রাত থেকে নোভা স্কশা প্রদেশে দীর্ঘ ১২ ঘণ্টা ধরে এই তাণ্ডব চলে। শেষ পর্যন্ত গাড়ি নিয়ে ধাওয়া করে পুলিশ ওই হামলাকারীকে থামায়।
৫১ বছর বয়সী ওই হামলাকারীও পুলিশের অভিযানে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।
হামলার শুরুতে ছোট্ট শহর পোর্টাপিকের বাসিন্দাদের দরজা বন্ধ করে ঘরে থাকার পরামর্শ দেয় পুলিশ। ওই হামলাকারী সে সময় যে গাড়ি চালাচ্ছিলেন, সেটি সাজানো হয়েছিল পুলিশের গাড়ির মত করে।
নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
যারা নিহত হয়েছেন তাদের মধ্যে রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ (আরসিএমপি) কনস্টেবল হাইডি স্টিভেনসনও আছেন। ২৩ বছর ধরে তিনি পুলিশ বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন।
এক ফেইসবুক পোস্টে নোভা স্কশার আরসিএমপির কমান্ডিং অফিসার সহকারী কমিশনার লি বার্গারম্যান বলেন, “হাইডি দায়িত্বের ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন এবং যাদের সেবায় নিয়োজিত ছিলেন তাদের রক্ষা করার সময় প্রাণ হারিয়েছেন।
“দুই শিশু তাদের মাকে হারিয়েছে এবং এক স্বামী তার স্ত্রীকে। বাবা-মা তাদের কন্যাকে এবং অগণিত অসংখ্যজন তাদের অসাধারণ বন্ধু ও সহকর্মীকে হারিয়েছে।”
সিবিসি নিউজের ভাষ্য অনুযায়ী, আরসিএমপি কমিশনার ব্রেন্ডা লাকি জানিয়েছেন, শুরুর দিকে বন্দুকধারীর প্রাথমিক ‘উদ্দেশ্য’ ছিল পরে তা ‘এলোমেলো হয়ে যায়’।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এই ঘটনাকে ‘ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি’ বলে বর্ণনা করেছে।
নোভা স্কশার মুখ্যমন্ত্রী স্টিভেন ম্যাকনিল সাংবাদিকদের বলেছেন, “এটি আমাদের প্রদেশের ইতিহাসে অন্যতম নিরর্থক সহিংসতার ঘটনা।”
পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার রাতে প্রথম আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলার খবর পান তারা।
কয়েকটি টুইটে অভিযুক্ত হামলাকারীকে ৫১ বছর বয়সী গ্যাবরিয়েল ওর্টম্যান বলে শনাক্ত করেছে নোভা স্কশার পুলিশ। সে আরসিএমপিতে চাকরি করতো না কিন্তু ‘সম্ভবত আরসিএমপির উর্দি’ পরে ছিল বলে জানিয়েছে তারা।
রোববার এক টুইটে পুলিশ বলে, “আমাদের রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশের গাড়ির সঙ্গে তার গাড়ির একটা পার্থক্য ছিল: গাড়িটির # (রেজিস্টেশন প্লেট) । সন্দেহভাজনের গাড়ি ছিল 28B11, যা পেছনের প্যাসেঞ্জার উইন্ডোর পেছনদিকে ছিল।”
এই নাম্বারের গাড়িটি কারও চোখে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে 911 এ ফোন করেতে বলেছে তারা।
বন্দুকধারী পরে গাড়ি পরিবর্তন করে একটি ‘রূপালি রঙের ছোট শেভ্রোলে এসইউভি’ চালায় বলে পুলিশ জানিয়েছে। তবে সন্দেহভাজন বন্দুকধারীর মৃত্যু কীভাবে হয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি তারা।
প্রতিবেশী যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় বন্দুক আইন কঠোর হওয়ার কারণে কানাডায় নির্বিচার হত্যার ঘটনা অনেকটা কম। ২০১৯ সালে পলাতক দুই কিশোর ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় এক দম্পতিসহ তিন জনকে হত্যার কথা স্বীকার করেছিল। ১৯৮৯ সালে একজন বন্দুকধারী একটি শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে সব ছাত্রদের বের করে দিয়ে ১৪ ছাত্রীকে গুলি করে হত্যা করেছিল।