কাতার বিশ্বকাপে নিরাপদ বোধ করছেন নারী দর্শকরা
এবার ফুটবল বিশ্বকাপের ২২তম আসর বসেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে। মুসলিমপ্রধান দেশটি সংরক্ষণশীল হওয়ায় অনেকে খেলা দেখতে যাওয়ার আগে সংশয়ে ছিলেন নিরাপত্তা ও খোলামেলা চলাফেরা করা নিয়ে। বিশেষ করে নারী ফুটবলপ্রেমীরা। ফুটবল খেলা চলাকালীন মাঠে মদ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে বিধিনিষেধ থাকলেও অনেক নারী দর্শকই বলছেন, তারা কাতারে খেলা দেখতে গিয়ে নিরাপদ বোধ করছেন।
ইংল্যান্ড থেকে খেলা দেখতে আসা এলি মলোসন রয়টার্সকে বলেন, ‘আমি ধারণা করেছিলাম কাতার মেয়েদের জন্য খুবই ভয়ানক একটা জায়গা। আমি নিজের নিরাপত্তা নিয়েও চিন্তিত ছিলাম। কিন্তু এখানে আসার পর যত দিন যাচ্ছে, মনে হচ্ছে আমি যা ভেবেছি, সেটি ঠিক ছিল না। নারী হিসেবে কাতারে ঘুরে আমি নিরাপদ বোধ করেছি।’
মলোসন একটি নারীবাদী সংগঠনের শুভেচ্ছাদূতও। ‘হার গেম টু’ নামের সেই সংগঠন ফুটবলে নারী দর্শকদের অংশগ্রহণ নিয়ে কাজ করে। তিনি জানান, কাতার আসার আগে তার বাবাও অস্বস্তিতে ছিলেন। পরে তিনি শেষ পর্যন্ত তার সফর সঙ্গী হয়েছেন।
মলোসন, মাঠে অ্যালকোহল নিষিদ্ধ থাকাটাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, ‘মাঠে যে কোনো ধরনের অ্যালকোহল নিষিদ্ধ থাকা ভালো হয়েছে। এতে গ্যালারির পরিবেশ ভালো থাকছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে হইচই পছন্দ করি। কাতারের স্টেডিয়ামগুলোর পরিবেশ অনেক ভালো, শান্ত।’
আর্জেন্টাইন নারী দর্শক আরিয়ানা গোল্ডও রয়টার্সক একই ধরনের কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘কাতারে আসার আগে আমি ঠিক স্বস্তি পাচ্ছিলাম না। ভেবেছিলাম, এখানকার পরিবেশটা খুবই কড়া হবে। ভেবেছিলাম এই দেশটা শুধু পুরুষদের, মেয়েদের জন্য অস্বস্তিকর। কিন্তু না, আমি এই দেশে খুব আনন্দে আছি, স্বস্তিতে আছি।’
ইংল্যান্ডের শেফিল্ড থেকে আসা এমা স্মিথও গলা মিলিয়েছেন মলোসন ও আরিয়ানার সঙ্গে। তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল কাতার নিরাপদ কিনা, তিনি বলেন, ‘আমি এখানে খুবই নিরাপদ বোধ করছি। কোনো সমস্যা নেই। অ্যালকোহল নিষিদ্ধ থাকাটা বরং নারীদের জন্য অনেক নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করেছে।’
ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা সম্প্রতি জানিয়েছে, জনপ্রিয় খেলার এই বড় আসরে এবার গ্রুপ পর্বের খেলা স্টেডিয়ামে বসে উপভোগ করেছেন ২৪ লাখের বেশি দর্শক। ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে অনুষ্ঠিত হয় ৪৮টি ম্যাচ। এখন পর্যন্ত খেলার দর্শক সংখ্যার দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে সৌদি আরব এবং দ্বিতীয় অবস্থানে
রয়েছে ভারত।
গত ২ ডিসেম্বর থেকে বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে বিশ্বকাপের টিকিটবিহীন ভ্রমণকারীদের প্রবেশের অনুমতি দেয় কাতার। কাতার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, টিকিটবিহীন কোনো ভক্তের কাছে হায়া কার্ড, বুক করা হোটেল রিজার্ভেশন এবং ৫০০ কাতারি রিয়াল (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৩ হাজার ৮৭০ টাকা প্রায়) ফি থাকলেই তিনি কাতারে প্রবেশের অনুমতি পাবেন।