কাটল সম্পর্কের জট, মালয়েশিয়াকে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন দিতে রাজি ভারত
গোটা বিশ্ব তখনও করোনাভাইরাসের কবলে পড়েনি। সবেমাত্র শুরু হয়েছিল চীনে। সেইসময় পাম তেল নিয়ে ভারত-মালয়েশিয়ার মধ্যে শুরু হওয়া সম্পর্কের টানাপোড়েন এবার কাটিয়ে দিয়েছে করোনাভাইরাস।
মালয়েশিয়াকে কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ওষুধ দিতে রাজি হয়েছে ভারত। মালয়েশিয়ার এক মন্ত্রী বুধবার রয়টার্সকে একথা জানিয়েছেন।
ভারত ওষুধটি রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আংশিক তুলে নিয়ে বিভিন্ন দেশকে তা দিতে শুরু করেছে। বিশ্বে ভারতেই হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন সবচেয়ে বেশি উৎপাদন হয়।
তাই এ ওষুধের জন্য বিশ্বের দেশগুলো ভারতের মুখাপেক্ষী হয়ে আছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ব্রাজিল এবং জাপানকে ভারত এরই মধ্যে এ ওষুধ দিয়েছে।
এবার মালয়েশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী কামারুদ্দিন জাফর জানালেন, মালয়েশিয়াকে ১৪ এপ্রিলে ভারত ৮৯,১০০ টি ট্যাবলেট আমদানির অনুমতি দিয়েছে। তিনি বলেন, “ আমরা ভারত থেকে আরো হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন আনার চেষ্টা করব।”
তবে এ ব্যাপারে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে তারা তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন হাতিয়ার হতে পারে বলে আশার কথা শুনিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। পরে তিনি ভারতের কাছ থেকে এ ওষুধ চান। এরপরই বিশ্বের অনেক দেশ ভারতের কাছে এ ওষুধ সহায়তা চায়।
ভারত সরকার প্রথমে নিজ দেশের চাহিদা মেটাতে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও পরে সিদ্ধান্ত নেয়, প্রতিবেশী দেশগুলোসহ যেসব দেশের ওষুধটি প্রয়োজন তাদেরকে সেটি দেবে তারা।
মালয়েশিয়া কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসায় অন্যান্য ওষুধের পাশাপাশি হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনও ব্যবহার করছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এ দেশটিতেই আক্রান্তর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৫ হাজার। আর মৃতের সংখ্যা ৮২।
এমন পরিস্থিতিতে দেশটিতে ভারতের ওষুধ সরবরাহের সিদ্ধান্ত দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কে নতুন মোড় পরিবর্তনেরই লক্ষণ। পাম অয়েল নিয়ে ভারত-মালয়েশিয়ার মধ্যে কূটনৈতিক বিবাদে ব্যাহত হয়েছিল আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য।
ভারতের কিছু নীতি, বিশেষ করে, দেশটির নতুন নাগরিকত্ব আইন নিয়ে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের সমালোচনার কারণে দু’দেশের সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল। মালয়েশিয়া থেকে পাম তেল আমদানি নিষিদ্ধ করেছিল ক্ষুব্ধ ভারত।