কাউন্টার টেরোরিজম হাল ছাড়লেও আসামি ধরেছে পিবিআই
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
ইয়াবা পাচারের মামলায় যে আসামিকে শনাক্ত করতে না পেরে অভিযোগপত্র থেকে নাম বাদ দিয়েছিল পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট, তদন্তভার পেয়ে সেই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
ঘটনার দশ মাস পর টেকনাফ থেকে ইয়াবা সরবরাহকারী আবুল কাশেম ওরফে শাহীনকে (৩০) গ্রেপ্তার করে পিবিআই বলছে, এক সময়ের বাসের সহকারী কাশেম ইয়াবা করবারের পাশাপাশি ডাকাতি ও ভাড়াটে খুনি হিসেবে কাজ করে।
পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক এনায়েত কবীর বলেন, গত ৯ ফেব্র“য়ারি শাহ আমানত সেতু এলাকায় একটি পিকনিক বাস থেকে দুই লাখের বেশি ইয়াবাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওই ঘটনায় বাকলিয়া থানায় করা মামলায় গ্রেপ্তার বাসমালিক আতিয়ার রহমান, চালক জুয়েল রানা ও আরেকজন আসামি ইকবাল হোসেন আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে রাজু ও কাশেম নামের দুই ব্যক্তির কাছ থেকে সংগ্রহ করার তথ্য দিয়েছিলেন।
বাকলিয়া থানার মামলাটি তদন্ত করে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট গত ৩০ জুন আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। কাশেম ও রাজুর পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা ও অবস্থান শনাক্ত করতে না পেরে তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে তাদরকে অব্যহতি দেওয়ার সুপারিশ করেন।
আদালত অভিযোগপত্রটি গ্রহণ না করে দুই খুঁজে বের করার জন্য অধিকতর তদন্তের আদেশ দেয় পিবিআইকে। পিবিআই কর্মকর্তা এনায়েত বলেন, মামলাটি আমরা গ্রহণ করে গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাজুকে গ্রেপ্তার করি। তার কাছ থেকে কাশেম এবং ইয়াবা চালানের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করি।
তিনি জানান, রাজুর কাছ থেকে এবং বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহ পিবিআইর একটি দল কক্সবাজারের রামুতে ছদ্মবেশে অবস্থান নিয়ে কৌশলে কাশেমকে গ্রেপ্তার করে সোমবার চট্টগ্রামে নিয়ে আসে।
পরিদর্শক এনায়েত বলেন, আগে গ্রেপ্তাররা জবানবন্দিতে জানিয়েছেছিলেন পিকনিকের যে বাসটি র্যাব আটক করেছিল সেটির মালিক আতিয়ার। ট্রাক মালিক থেকে বাসের মালিক হওয়া আতিয়ারকে কয়েকজন পরামর্শ দিয়েছিল পিকনিকে গিয়ে ইয়াবা আনার। সেজন্য তারা যশোরে লোকজনকে কক্সবাজারে পিকনিকে এনেছিল বিনা ভাড়ায়। তবে পিকনিকের যাত্রীরা ইয়াবা সংগ্রহের বিষয়ে কিছুই জানতেন না।
এনায়েত আরও বলেন, আতিয়ার ও তার সহযোগীরা রাজুকে বাসের সহকারী হিসেবে ঠিক করেছিল। সে এবং কাশেম টেকনাফ থেকে ইয়াবাগুলো বাসে তুলে দিয়ে নেমে গিয়েছিল। কথা ছিল যশোরে নিয়ে ইয়াবাগুলো বিক্রি করার। কিন্তু চালানটি চট্টগ্রামেই র্যাবের হাতে ধরা পড়ে।
এই কাশেম একসময় কক্সবাজারে হিল লাইন সার্ভিস নামে একটি বাসের হেলপার ছিলেন বলে পুলিশ কর্মকর্তা এনায়েত জানান। তখন সে ডাকাতদের সোর্স হিসেবে বিভিন্ন তথ্য দিত, বাইশারী রোডে ব্যারিকেড দিয়ে গাড়িতে ডাকাতি এবং যাত্রীদের অপহরণ করে পাহাড়ে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনা ঘটাত।
বাস মালিক, চালক ও স্থানীয়রা কাশেমের বিষয়টি জানতে পারলে সে কাজ ছেড়ে পাহাড়ে গিয়ে ডাকাতদলের সাথে যোগ দেয়। ২০১৪ সালে কাশেম ভাড়াটে খুনি হিসেবে রামুতে এক স্কুল শিক্ষককেও হত্যা করেছে বলে তথ্য পেয়েছে পিবিআই।