কলারোয়ায় কুল ও পেয়ারা চাষে ব্যাপক সাফল্য
কলারোয়া (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় কৃষকরা উন্নত জাতের কুল ও পেয়ারা চাষ করে বড় ধরণের সাফল্য অর্জন করেছেন। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মহাসীন আলী জানান-এ বছর কলারোয়া উপজেলায় ৩’শ ১৬ হেক্টর জমিতে কুলের চাষাবাদ হয়েছে। তিনি আরো জানান- কুল চাষ এ অঞ্চলে নিয়মিত অন্যান্য ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি এটি একটি উল্লেখযোগ্য অর্থকারী ফসল। যা কৃষি ক্ষেত্রে এনে দিয়েছে নতুন বিপ্লব।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, এখানকার মাটি দো-আঁশ। যা কুল চাষের জন্য বিশেষ ভাবে উপযোগী। অপরদিকে বর্তমান সময়ে প্রচলিত বিভিন্ন ফসল চাষে আর্থিকভাবে কৃষকরা বেশি লাভবান না হওয়ায় তারা ওইসব ফসলের বিকল্প হিসাবে বেছে নিয়েছেন কুল চাষ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখানকার মাটি ও আবহাওয়া কুল চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় বিঘা প্রতি ১শ’৫০ থেকে ১শ’৭০ মণ কুল উৎপাদন হয়। তাদের মতে, কলারোয়ার কৃষকরা কুল ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে থাকে। একই সাথে কৃষকরা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এখানকার কুল বিদেশে রফতানি করা সম্ভব হবে। সরেজমিন গত শনিবার সকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন জাতের কুলে ছেয়ে গেছে বাগান।
হেলাতলার কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে স্থানীয় বিভিন্ন জাতের কুল ছাড়াও উন্নত জাতের আপেল কুল, বাউকুল, তাইওয়ান ও থাইকুলের চাষ হচ্ছে ব্যাপকভাবে। এর মধ্যে আপেল কুল বেশি সমাদৃত। তিনি বলেন, সরকারি সুযোগ-সুবিধা ও প্রয়োজনীয় কৃষি উপকরণ, সার-বীজ আধুনিক চাষাবাদ সম্পর্কে ধারণা পেলে কুল চাষে আগামীতে আরো বিপপ্লব সাধিত হবে। তিনি এ বছর ২ বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের কুল চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে বলে জানান। তিনি এছাড়া ১বিঘা জমিতে থাই পেয়ারা চাষ করেছেন। এই পেয়ারা ও কুল চাষের জমি দেখা শুনা করেন তিনি ও তার কলেজ পড়–য়া ছেলে ইমরান হুসাইন।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিধ মহাসীন বলেন, কলারোয়ার মাটি কুল চাষের জন্য বিশেষ ভাবে উপযোগী হওয়ায় বর্তমানে এখানকার কৃষকরা বাণিজ্যিকভাবে কুল চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। তার মতে, ক্যালরিসম্পন্ন কুলের গবেষণা চালিয়ে উন্নত জাত তৈরি করে ব্যাপক আবাদের ব্যবস্থা করলে কলারোয়ায় প্রধান অর্থকরী ফসল আমের পরেই হবে কুলের স্থান। যা বিদেশে রফতানি করে অর্থনৈতিকভাবে কৃষকদের স্বাবলম্বী হতে সাহায্য করবে। বতমানে কলারোয়ার কুল এলাকার চাহিদা পূরণের পাশা-পাশি প্রতিদিন রাজধানী ঢাকা-সহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রয় করা হচ্ছে।