January 20, 2025
আন্তর্জাতিকজাতীয়

কলকাতা হয়ে চট্টগ্রাম ছুঁয়ে জাহাজ গেলো ত্রিপুরায়

 চট্টগ্রাম বন্দরের মধ্যস্থতায় কলকাতা থেকে জাহাজে ত্রিপুরায় পণ্য পরিবহন শুরু হলো বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) থেকে। যা বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের সঙ্গে ট্রান্সশিপমেন্ট চুক্তির আওতায় পরীক্ষামূলক পণ্য পরিবহন।

খিদিরপুরে কলকাতা পোর্টট্রাস্টের (বর্তমান নাম শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বন্দর) গেট নম্বর ৭ থেকে এমভি সেঁজুতি নামে পণ্যবাহী জাহাজে করে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জন্য দুই টিইইউ (কুড়ি ফুট সমতুল্য ইউনিট) বহনে সক্ষম টিএমটি ইস্পাত এবং আসামের করিমগঞ্জের জন্য ডাল পাঠানো হয়েছে। জানা যায়, এ জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছানোর পর বাংলাদেশি ট্রাকে করে আগরতলায় পণ্য পৌঁছানো হবে।

আগামী দিনে এ ব্যবস্থার মাধ্যমে ত্রিপুরাসহ উত্তরপূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে চাল, গম, ডালসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আরও বেশি পরিমাণে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন বন্দরের চেয়ারম্যান বিনিত কুমার।

বিনিত কুমার বলেন, বাংলাদেশের সহযোগিতায় কলকাতা থেকে জাহাজে করে পণ্য পাঠালে সময় যেমন বাঁচবে, তেমনই পরিবহন খরচ কম হবে।

এদিনের এ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক ভাবে ভারত থেকে ভার্চ্যুয়াল উদ্বোধন কেন্দ্রীয় জাহাজ চলাচল মন্ত্রকের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী শ্রী মনসুখ মান্ডব্য। মান্ডব্য বলেন, এ যাত্রাপথের সূচনার মধ্যে দিয়ে উভয় দেশের কাছে এক নতুন সুযোগের দরজা খুলে গেল। এটি বাংলাদেশের মাধ্যমে ভারতের উত্তরপূর্ব অঞ্চলে সংযোগ স্থাপনের বিকল্প রাস্তা। এতে সময়ও কম লাগবে।

তিনি আরও বলেন, ভারতে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলের জন্য চট্টগ্রাম এবং মোংলা বন্দরকে ব্যবহার করা একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। এদিন থেকে ভারত-বাংলাদেশের সামুদ্রিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হল। এর ফলে ভারতে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে সময় ও দূরত্ব কমে আসবে এবং উভয় দেশই আর্থিক দিক দিয়ে লাভবান হবে। এতে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে, পণ্য পরিবহন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়বে, বাণিজ্যিক পরিষেবা বাড়বে এবং রাজস্ব খাতেও আয় বাড়বে। এর সবকিছুর সুফল পাবে দু’দেশই। বাংলাদেশি জাহাজ ও ট্রাক ভারতীয় পণ্য পরিবহনে ব্যবহার করা হবে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের মাধ্যমে উত্তর পূর্ব ভারতে পণ্য পরিবহন নিয়ে ২০১৫ সালে নয়াদিল্লি ও ঢাকার মধ্যে চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিল। সেই চুক্তি অনুযায়ী ভারত এ প্রকল্পে ৮০ শতাংশ খরচ বহন করবে, বাকি ২০ শতাংশ খরচ দেবে বাংলাদেশ সরকার।

তারপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২০১৯ সালের অক্টোবরে ভারত সফরের সময় দু’দেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ে আলোচনার পর উভয় দেশের মধ্যে সমঝোতা অনুযায়ী বাংলাদেশ এবং ভারতের উত্তরপূর্ব রাজ্যগুলোর মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা জোরদার করার প্রয়াস চালানো হয়েছিল। তারই ফলস্বরূপ এ দিনের যাত্রা।

এরই মধ্যে পর্যটন এবং দু’দেশের মানুষের মধ্যে যোগাযাগ স্থাপনের বিষয়ে উৎসাহ ইন্দো-বাংলার মধ্যে ক্রুজ পরিষেবাও শুরু হয়েছে।

এছাড়া ত্রিপুরার সাব্রুমে ফেনী নদীর ওপর একটি সেতু তৈরি হচ্ছে। চলতি বছরেই এটি চালু হয়ে যাওয়ার কথা। ওই সেতুটি হয়ে গেলে ত্রিপুরা থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের দূরত্ব আরও কমে যাবে বলে জানা গিয়েছে। তবে সাব্রুম পর্যন্ত রেলপথ এরই মধ্যে চালু হয়েছে।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *