করোনা সংক্রমণ পরবর্তী নতুন চিকিৎসা আবিষ্কার
করোনা সংক্রমণ পরবর্তী নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। এ পদ্ধতিতে শরীরে করোনাভাইরাসের বংশবৃদ্ধি থামিয়ে দেওয়া সম্ভব। এবং এ পদ্ধতিতে দারুণ সফলতা মিলেছে বলেও দাবি তাদের।
এ সংক্রান্ত গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে ‘প্রসিডিংস অব দ্যা ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্স’ জার্নালে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ইঁদুরের ওপর গবেষণা চালিয়ে তারা এ চিকিৎসায় সফলতা পেয়েছেন। গবেষণায় বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কিছু প্রাণীর শরীরে প্রোটিজ এনজাইমের একটি প্রতিরোধক হিসেবে জিসি-৩৭৬ নামক ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। এতে প্রাণীগুলোর বেঁচে যাওয়ার হার বেড়েছে এবং তাদের ফুসফুসে ভাইরাসের পরিমাণও কমেছে।
জিসি-৩৭৬ হলো এক ধরনের অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ, যা নির্বাচিত কিছু এনজাইমের জন্য ভাইরাসের পুনরুৎপাদন বা বংশবিস্তার থামিয়ে দেয়। বিজ্ঞানীদের মতে, আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো জিসি-৩৭৬ ওষুধটি করোনাভাইরাসের বংশবৃদ্ধিও রোধ করতে পারে। গবেষক দলটি করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে এর কার্যকারিতা পরীক্ষা করার জন্য ডিউট্রেশন নামক একটি টুলের সহায়তা নিয়েছেন এবং জিসি-৩৭৬-এর মডিফায়েড ভার্সন ব্যবহার করেছেন।
গবেষণার সঙ্গে যুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের কানসাস স্টেট ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক ইয়ুনজিয়ং কিম বলেন, ‘করোনাভাইরাসে আক্রান্ত একটি বিড়ালকে চিকিৎসার জন্য আমরা প্রোটিজ প্রতিরোধক জিসি-৩৭৬ তৈরি করেছি। পশুর ওপর পরীক্ষা চালানোর জন্য ওষুধ হিসেবে এটি এখন বাণিজ্যিক পর্যায়ে উন্নয়নের কাজ চলছে।করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর অনেক গবেষণা প্রতিষ্ঠান জানায়, এই প্রতিরোধক করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য কার্যকর। এখন অনেকেই এটি নিয়ে কাজ করছেন।’
তবে মানব শরীরে এই চিকিৎসা কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে কিছু জানানো হয়নি নতুন এই গবেষণায়। গত বছর কানাডার আলবার্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের এক গবেষণাপত্রে বলা হয়েছিল, কোভিড-১৯ আক্রান্ত বিড়ালের চিকিৎসায় জিসি-৩৭৬ ওষুধ সহায়ক হতে পারে। পাশাপাশি এটি মানুষের জন্যও উপকারী হতে পারে।
নেচার কমিউনিকেশন্স জার্নালে প্রকাশিত ওই গবেষণায় গবেষকরা উল্লেখ করেছিলেন, ‘মানব শরীরে করোনা সংক্রমণের চিকিৎসায় এই ওষুধ সম্ভাবনায় হতে পারে, কারণ প্রাণীর শরীরে ইতোমধ্যে এর সাফল্য আমরা লক্ষ্য করেছি।’