January 21, 2025
আন্তর্জাতিককরোনা

করোনা: লকডাউন শিথিলের পরিকল্পনা ইতালির প্রধানমন্ত্রীর

করোনা ভাইরাস মহামারি প্রতিরোধে সাত সপ্তাহ আগে জারি করা লকডাউনের বিধিনিষেধ শিথিলের পরিকল্পনা করছে ইতালি। মার্চের মাঝামাঝি থেকে মৃত্যু কমতে থাকায় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি।

সোমবার (২৭ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানায়।

ইতালির প্রধানমন্ত্রী জুসেপ্পে কোন্তে বলেন, ৪ মে থেকে মাস্ক পরিহিত অবস্থায় অল্পসংখ্যক লোকজন তাদের আত্মীয়দের দেখতে যেতে পারবেন। পার্কগুলো খুলবে, তবে সেপ্টেম্বর মাসের আগে স্কুল খুলবে না।

সুইজারল্যান্ড এবং স্পেনও তাদের বিধিনিষেধ শিথিলের কথা জানিয়েছে।

রোববার (২৬ এপ্রিল) করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ইতালিতে মারা গেছেন ২৬০ জন, যা ১৪ মার্চের পর সর্বনিম্ন। দেশটিতে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২৬ হাজার ৬৪৪ জনের, যা ইউরোপে সর্বাধিক।

দেশটিতে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ৯৭ হাজার ৬৭৫। নতুন রোগী শনাক্তের হার কমছে। কর্তৃপক্ষ মনে করছে, ভাইরাসটির সংক্রমণের হার কমেছে। ফলে বিধিনিষেধ শিথিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।

টেলিভিশনে দেওয়া বক্তব্যে কোন্তে বলেন, লকডাউন শিথিলের দ্বিতীয় ধাপ শুরুর পরিকল্পনা নিয়েছে ইতালি।

এতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হবে, সেগুলো হলো:

– লোকজন নিজেদের অঞ্চলে ঘোরাফেরার অনুমতি পাবেন কিন্তু অন্য অঞ্চলে যাওয়া-আসা করতে পারবে না।

– শেষকৃত্যের অনুষ্ঠান ফের চালু হবে। তবে সর্বাধিক ১৫ জন এতে উপস্থিত থাকতে পারবেন এবং অনুষ্ঠানটি খোলা জায়গায় অনুষ্ঠিত হবে।

-একক খেলোয়াড়রা অনুশীলন শুরু করতে পারবেন। ঘরের বাইরে বড় উন্মুক্ত এলাকায় খেলাধুলা করতে পারবেন লোকজন।

-৪ মে থেকে পানশালা ও রেস্তোরাঁ খুলবে। তবে সেখানে বসে খাওয়া বা পান করা যাবে না। খাবার নিয়ে বাসায় বা অফিসে খেতে হবে। ডেলিভারি সার্ভিস আগে থেকেই চালু রয়েছে।

-১ জুন থেকে চুলকাটার সেলুন, পার্লার খুলবে। এ সময় থেকে পানশালা ও রেস্তোরাঁয় বসে খাওয়ার সুযোগ চালু হবে।

-যে দোকানগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে খোলেনি, সেগুলো ১৮ মে থেকে খুলতে শুরু করবে। একই সময়ে খুলবে জাদুঘর এবং লাইব্রেরি।

-১৮ মে থেকে খেলোয়াড়রা দল বেঁধে প্রশিক্ষণ শুরু করতে পারবেন।

ইতালির প্রিমিয়ার ফুটবল লিগ সিরি-এ চালু হবে কিনা, এ বিষয়ে এখনো কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি।

আগামী মাসগুলোতেও সামাজিক দূরত্বায়ন মেনে চলার ওপর জোর দিয়েছেন কোন্তে। চার্চের ধর্মীয় অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে বলেও জানান তিনি। জনগণকে একে অপরের কাছ থেকে এক মিটার বা তিন ফুট দূরত্বে থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি সতর্কতা অবলম্বন না করি, সংক্রমণ আবারও বাড়বে, সেই সঙ্গে বাড়বে মৃত্যু। অর্থনীতির অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যাবে। আপনারা যদি ইতালিকে ভালোবেসে থাকেন, তাহলে দূরত্ব বজায় রাখুন।’

গত ৯ মার্চ থেকে বাড়িতে অবস্থানের নির্দেশ জারি হয় ইতালিবাসীর ওপর। ১৪ এপ্রিল লকডাউনের বিধিনিষেধ সীমিত পরিসরে শিথিল করা হয়। এসময় বইয়ের দোকান, ড্রাই ক্লিনার্স এবং স্টেশনারির দোকান খোলার অনুমতি দেওয়া হয়। সাধারণত ভিড় কম হওয়ায় এসব দোকান নিম্ন ঝুঁকিতে রয়েছে বলে এ সিদ্ধান্ত হয়।

বিধিনিষেধ শিথিলের পর সংক্রমণ আবারও বাড়তে থাকলে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে সরকার।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *