January 23, 2025
করোনাজাতীয়লেটেস্ট

করোনা মোকাবিলায় নৌযানে আইসোলেশন সেন্টার করা হবে

করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় প্রয়োজনে নৌযানকেও আইসোলেশন সেন্টার বা হাসপাতালে রূপান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ইতোমধ্যে লঞ্চ মালিক সমিতি অনুমতি দিয়েছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যদি প্রয়োজন মনে করে তাহলে লঞ্চগুলোকে আইসোলেশন সেন্টার হিসেবে ব্যবহার করতে আমরা প্রস্তুত আছি। এতে উপকূলীয় অঞ্চলের জনগণের কাছে চিকিৎসা সেবা দ্রুত পৌঁছে দেওয়াসহ করোনা সংক্রমণ রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে জানান তিনি।

শনিবার (৪ এপ্রিল) ঢাকা সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল সভাকক্ষে বেসরকারি লঞ্চ মালিকদের সঙ্গে নৌযানে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় নৌপরিবহন সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান, লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি মাহমুদ উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রমসহ অন্যান্য লঞ্চ মালিক ও বিআইডব্লিউটিএ, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আজকের আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছি, করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রয়োজনে আমাদের যাত্রীবাহী লঞ্চগুলোকে আইসোলেশন সেন্টার হিসেবে ব্যবহার করা হবে। ইতোমধ্যে লঞ্চ মালিক সমিতি অনুমতি দিয়েছেন। এখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যদি প্রয়োজন মনে করে তাহলে লঞ্চগুলোকে আইসোলেশন সেন্টার হিসেবে ব্যবহার করতে আমরা প্রস্তুত আছি। আমরা মনে করি উপকূলে যেসব মানুষজন আছে যেখানে এখনও করোনার চিকিৎসা পৌঁছায়নি। সেসব স্থানে এই রোগে যদি আক্রান্ত হয় তখন এ পদক্ষেপটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আমরা এখন সিদ্ধান্ত নিলাম স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যদি প্রয়োজন মনে করে তাহলে আমাদের লঞ্চগুলোকে ব্যবহার করতে পারে। আজকের এই সিদ্ধান্ত সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রয়োজনে বাস্থবায়ন করা হবে।

নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, লঞ্চের নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তের কারণে আমাদের নৌযান চলাচল বন্ধ করায় অনেক লঞ্জ বিভিন্ন স্থানে ছড়ি ছিটিয়ে রয়েছে। সে বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তীতে কিভাবে নিরাপদ স্থানে আনার যায় সে ব্যপারে আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো। নদীর মাঝে একটি শেল্টার সেন্টারের জন্য সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করা হবে। আপনাদের সহযোগিতার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি। পাশাপাশি আমাদের শ্রমিকদের প্রয়োজন হলে যতো দিন পর্যন্ত করোনা সংকট থেকে উত্তরণ না হবো ততদিন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে সর্বাত্মাক সহযোগিতার শ্রমিকদের জন্য থাকবে। আমরা সব সময় শ্রমিকদের পাশে আছি।

তিনি বলেন, লঞ্জ বা নৌযান মালিকদের ব্যবসায়িক ক্ষতির বিষয়ে সরকার নিশ্চয় দেখবে। সরকার যেমন রপ্তানি পণ্যে ইতোমধ্যে প্রণোদনা ঘোষণা করেছে। আমাদের এই স্থানটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের প্রায় ৩৫ শতাংশ যাত্রী নৌপথে চলাচল করে। কাজেই গুরুত্বপূর্ণ এই পরিবহন ব্যবস্থাকে সরকার অবশ্যই পজিটিভলি দৃষ্টি ভঙ্গিতেই দেখবে।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও জাতিসংঘের আশঙ্কা দক্ষিণ এশিয়ায় এপ্রিলের শেষে ও মে মাসে করোনা ভাইরাস ব্যাপক আকার ধারণ করবে। এই ভয়াবহতা আরো বেড়ে গেলে আমরা আরো সংকটের মধ্যে পড়ে যাবো। এজন্য আগে আমাদের করোনা মোকাবিলা করতে হবে।

তিনি বলেন, এর মধ্যে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল বন্ধ করে দিচ্ছে। এ লক্ষ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শুক্রবার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। যারা নির্দেশনা না মানবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। করোনার পরীক্ষার কিটস ইতোমধ্যে বিভাগীয় পর্যায় চলে গেছে। শিগগিরই জেলা পর্যায়ে পৌঁছে যাবে।

লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি মাহমুদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকার চাইলে আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি। লঞ্চে আইসোলেশেন সেন্টার স্থাপনের জন্য  স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যদি মনে করে তাহলে জাহাজ নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। একই সঙ্গে চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আমাদের কোনো জাহাজ উপযুক্ত সেটা জানালে আমরা ব্যবস্থা নেবো। তবে এক্ষেত্রে যথেষ্ট নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিতে হবে। দেশ বাঁচলে আমরাও বাঁচবো। একইসঙ্গে জাহাজ বা লঞ্চকে এই দুর্যোগপূর্ণ মুহূর্তে টিকিয়ে রাখতে হলে আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন।

তিনি বলেন, হঠাৎ বন্ধের ঘোষণায় আমাদের লঞ্চগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে অনিরাপদ স্থানে রয়েছে। এজন্য যাদের নিজস্ব ডকইয়ার্ড নেই তাদের নিদিষ্ট স্থান বা লঞ্চ টার্মিনালে নোঙরের ব্যবস্থা করতে হবে। আর স্থায়ীভাবে একটি নদীর মধ্যে একটি লঞ্চ শেল্টার স্থাপন করলে দুযোর্গপূর্ণ সময়ে লঞ্চগুলোকে নিরাপদে রাখা যাবে বলে জানান তিনি।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *