করোনা বাড়ছে পশ্চিমবঙ্গে, চিকিৎসকদের উদ্বেগ
আশঙ্কা বাড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গে লাফিয়ে বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। সংক্রমণ ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী।
যা নিয়ে আতঙ্কে রাজ্যটির চিকিৎসকমহল।
বরাবরের মতো রাজ্যের চিকিৎসকরা করোনার সেফটি প্রটোকল বা সচেতন বিধি মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন। কিন্তু প্রশাসন-সহ সাধারণরা বিষয়টি নিয়ে সচেতন নন। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এভাবে চলতে থাকলে করোনাভাইরাসের কারণে ফের ন্যুজ হয়ে পড়বে রাজ্যটি।
২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন পরবর্তী সময় করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রবল হয়ে ওঠে কলকাতায়। সে সময় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩০-৩৫ হাজারের বেশি। কলকাতা-উত্তর ২৪ পরগনায় মৃত্যু হয়েছিল সবচেয়ে বেশি। নিয়ম মেনে না চললে, আগরে মতো অবস্থা হতে পারে, এমন আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা।
গত দুই সপ্তাহ আগেও ৮০-১০০ জনের মতো করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছিল কলকাতায়। জুন শেষ হচ্ছে, লাফিয়ে বাড়ছে রোগী। ৭০০ জনের বেশি আক্রান্ত শনাক্ত হচ্ছে আজ-কাল। কোভিড-১৯ পজিটিভ রেট ৭ দশমিক ৩০ শতাংশ। কয়েকদিন আগে একজন রোগীর করোনা শনাক্ত হয়, অবাক করা ব্যাপার হলো- তার শরীরে ভাইরাসের সবচেয়ে ক্ষতিকারক ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের দুটি ধরন চিহ্নিত হয়।
বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছেন ৭৪৫ জন। এমন প্রবণতা জারি থাকলে খুব বেশিদিন সময় লাগবে না রাজ্যে ভাইরাসটির সংক্রমণ বাড়তে। আক্রান্তের হার সবচেয়ে বেশি হতে পারে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে দুর্গাপূজার সময়। জনগণের মাস্ক পরা বন্ধ করে দেওয়া, শারীরিক দুরত্ববিধি না মানা, সংক্রমণ বৃদ্ধিতে এসব কিছুকেই দায়ী করছেন চিকিৎসকরা।
কলকাতার বিশিষ্ট চিকিৎসক রাজেশ প্রামাণিক বলেছেন, যেকোনো ভাইরাস পৃথিবীতে এলে তার ৪-৫টা ওয়েভ বা ঢেউ থাকে। করোনাভাইরাসও ব্যতিক্রম নয়। নতুন ঢেউ আসবেই। এ সময় সতর্ক না হলে পরবর্তীতে সমস্যা দেখা দেবে। সবাই যেভাবে সবকিছু আলগাভাবে নিয়েছেন, তাতে করে অবস্থা খারাপ হওয়ারই কথা।
তিনি আরও বলেন, ভারতের অন্যান্য রাজ্যে করোনার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। সারা দেশে দৈনিক সংক্রমণ দশ হাজার পার করেছে। সামনে কতদিনের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে ভাইরাসটির সংক্রমণ শুরু হবে, তা বলা মুশকিল।
স্থানীয় সরকার ঘোষণা করেছে, সর্দি-কাশি-জ্বরের মতো উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে রোগীকে অবশ্যই করোনা পরীক্ষা করাতে হবে। রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ৯৪ এর নিচে থাকলে ও অতি ছোট অপারেশনের ক্ষেত্রেও করোনা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করেছে সরকার।