January 20, 2025
আন্তর্জাতিককরোনা

করোনা নিয়ে জাতিসংঘে উত্তেজনা

করোনাভাইরাস বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য চীনকে দায়ী করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বক্তব্য দেয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র-চীনের চলমান উত্তেজনা আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। করোনা মহামারির জন্য চীনের কাছে জবাবদিহি চেয়েছেন তিনি।

অন্যদিকে, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ভাষণে বলেছেন, বিশ্বের কোনও দেশের সঙ্গেই শীতল যুদ্ধে জড়ানোর ইচ্ছা নেই তার দেশের। করোনাভাইরাস মহামারি ছাড়াও আরও বেশ কিছু ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের দীর্ঘদিনের বিরোধ চলে আসছে।

জাতিসংঘের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নিউইয়র্কে এ বছর সাধারণ পরিষদের ভার্চ্যুয়াল অধিবেশন শুরু হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও নেতারা রেকর্ডকৃত ভাষণ দিচ্ছেন এই অধিবেশনে। প্রত্যেক দেশের একজন করে প্রতিনিধি সেখানে উপস্থিত থেকে ভাষণ দেয়ার সুযোগ পাওয়ায় বাকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা নেই।

তবে এবারের ভাষণেও অতীতের মতো ট্রাম্প তার অর্জন তুলে ধরে প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে বিষোদগার অব্যাহত রেখেছেন।

বিশ্বকে সংক্রমিত করেছে চীন : ট্রাম্প

মার্কিন এই প্রেসিডেন্ট বলেছেন, আমাদের অবশ্যই সেই দেশকে জবাবদিহি করতে হবে যারা এই মহামারি বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছে- চীন। তিনি বলেন, ভাইরাসের শুরুর দিকের দিনগুলোতে চীন অভ্যন্তরীণ ভ্রমণ বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু ফ্লাইটগুলোকে চীন ত্যাগ করতে দিয়েছে। এভাবে বিশ্বকে সংক্রমিত করেছে চীন।

ট্রাম্প বলেন, এমনকি চীন যখন অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বাতিল এবং নাগরিকদের নিজ বাড়িতে আটকে রেখেছে, তখনও আমার ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার নিন্দা করেছে চীন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই দেশটিতে করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেয়া পদক্ষেপ নিয়ে নানা ধরনের সমালোচনা অব্যাহত রয়েছে। চীনের বিরুদ্ধে বার বার এই ভাইরাসের বিষয়ে তথ্য লুকানোর অভিযোগ করেছেন তিনি। তবে চীন ট্রাম্পের এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করে আসছে।

ট্রাম্পের ভাষণের পরপরই চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বক্তৃতা করেন। এ সময় তিনি সভ্যতার সংঘাতের ঝুঁকির ব্যাপারে বিশ্বকে সতর্ক করে দেন।

শি জিনপিং বলেন, আমরা আলোচনা এবং সমঝোতার মাধ্যমে অন্যদের সঙ্গে মতবিরোধ এবং বিবাদগুলোর সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাবো। আমরা শুধু নিজেদের উন্নয়ন কিংবা অন্য দেশের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না।

যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ইঙ্গিত করে চীনের এই প্রেসিডেন্ট বলেন, বৈশ্বিক বিষয়গুলোতে আধিপত্য বিস্তার, অন্যদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ অথবা শুধুমাত্র নিজেদের উন্নয়নের জন্য অন্য দেশের কাছ থেকে সুবিধা নেয়ার অধিকার কোনও দেশেরই নেই। বিবিসি বলছে, সমালোচকরা চীনের বিরুদ্ধে প্রায়ই এ ধরনের অভিযোগ তোলেন।

শি জিনপিং তার ভাষণে বলেন, বিশ্বের বৃহত্তম গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমনকারী হিসেবে তার দেশ ২০৩০ সালে গ্যাস নির্গমনের চূড়ায় পৌঁছাবে এবং ২০৬০ সালের মধ্যে কার্বন নিরপেক্ষ হবে।

১৯৪৫ সালের অক্টোবরে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এবারই প্রথম ভার্চ্যুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের এবারের অধিবেশনে বিশ্বের ১১৯ দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও ৫৪ দেশের সরকারপ্রধান ভাষণ দেবেন। গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই অধিবেশন চলবে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *