করোনা ঠেকাতে সেনাবাহিনী নামাচ্ছেন কিম জং
করোনা মোকাবিলায় লকডাউন ঘোষণার কয়েক দিন পর উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন এবার পিয়ংইয়ংয়ে সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন। এরইমধ্যে উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করতে সামরিক বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
সোমবার (১৬ মে) এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান ও আল জাজিরা।
এর আগে, রোববার (১৫ মে) অনুষ্ঠিত এক জরুরি বৈঠকে কিম জং মন্ত্রিসভা ও জনস্বাস্থ্য খাতকে দায়িত্বহীন আখ্যা দিয়ে তাদের কাজের ধরন ও কৌশলের সমালোচনা করেছেন।
ওই সময় মন্ত্রিপরিষদ ও জনস্বাস্থ্য খাতের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে কিম বলেন, বর্তমান সংকট মোকাবিলায় আপনারা শুধু নিষ্ঠার সঙ্গে জনগণের সেবা করার কথা বলছেন। অথচ বাস্তবে আপনারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না।
কিম আরও বলেন, সরকার জাতীয়ভাবে মজুদকৃত ওষুধ বিতরণের নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও ফার্মেসিগুলো সময়মত ও সঠিকভাবে রাজ্যের জনগণের কাছে সেগুলো পৌঁছাতে পারছেনা।
এ সময় কিম পিয়ংইয়ং শহরে শিগগির ওষুধ সরবরাহ স্থিতিশীল করার জন্য সেনাবাহিনীর একটি শক্তিশালী দল মোতায়েন করার নির্দেশ দেন। এছাড়াও ওষুধ সরবরাহ ও বিক্রয় সম্পর্কে জানতে পিয়ংইয়ংয়ের তাইডং নদীর কাছে অবস্থিত ফার্মেসি পরিদর্শন করেন তিনি।
উত্তর কোরিয়ায় করোনা প্রাদুর্ভাবের পর বিশেষজ্ঞরা এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, উত্তর কোরিয়ায় ওষুধের সীমিত সরবরাহ, প্রয়োজনীয় টেস্টের অভাব ও ভাইরাসটির কোনো ভ্যাকসিন প্রোগ্রাম না থাকায় করোনা দেশটির জন্য ধ্বংসাত্মক হয়ে উঠতে পারে।
এরইমধ্যে দেশটিতে আরও ৩ লাখ ৯২ হাজার ৯২০ জনের করোনা উপসর্গ দেখা দিয়েছে (কেসিএনএর সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী)। তবে করোনার উপসর্গ থাকা কতজন করোনায় আক্রান্ত আপডেটে সে বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে নতুন করে আরও আট জনের মৃত্যু হয়েছে।
উত্তর কোরিয়া বলছে, করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে জ্ঞান না থাকা ও ওষুধ গ্রহণে অসতর্কতার কারণে এখন পর্যন্ত দেশটিতে বেশি সংখ্যক লোকের মৃত্যু হয়েছে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে দেশটিতে ১০ লাখেরও বেশি লোক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে (রাষ্ট্রীয় মিডিয়ার খবর অনুযায়ী)। অথচ কিম জং উনের প্রশাসন কয়েকদিন আগ পর্যন্ত উত্তর কোরিয়াকে করোনাভাইরাস মুক্ত বলে জোর প্রচারণা চালাচ্ছিলেন।
প্রসঙ্গত, উত্তর কোরিয়া করোনার শুরু থেকেই কঠোর অবরোধ বজায় রেখেছিল। কিন্তু দেশটির আর শেষ রক্ষা হলো না। বুধবার (১১ মে) আনুষ্ঠানিকভাবে করোনা সংক্রমণের কথা স্বীকার করে দেশটি। পরদিন (বৃহস্পতিবার) দেশটিতে লকডাউন জারি করা হয়। বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, দেশেটির জন্য করোনা মোকাবিলা অনেক কঠিন হবে।