করোনা আক্রান্তরা কাদের সঙ্গে মিশেছে ট্র্যাকিং করছি: সচিব
ইতালি ফেরত দু’জনের মাধ্যমে আরো একজনের শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রামণ হয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম বলেছেন, তারা কার কার সঙ্গে মিশেছে তাদের ট্র্যাকিং করে স্থানীয়ভাবে পর্যবেক্ষণে রেখেছি। তারা কার সঙ্গে মিশেছে, কোথায় গেছে, কোন বাজারে গেছে, কোন বাজারে চা খেয়েছে, কাদের সঙ্গে বসেছে- সবকিছু করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রোটোকল অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছি।
সোমবার (৯ মার্চ) সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আসাদুল ইসলাম একথা বলেন।
বিশ্বের একশ’র বেশি দেশে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যে প্রথমবার রোববার (৮ মার্চ) বাংলাদেশে তিনজন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। ইতালি ফেরত দু’জনের মধ্যে একজন থেকে আরোকজনের শরীরেও এই ভাইরাস ছড়ায়।
আক্রান্তরা বিদেশ থেকে এলেও বিমানবন্দরে স্ক্রিনিংয়ে ধরা পড়লো না কেন- প্রশ্নে স্বাস্থ্য সচিব বলেন, ভাইরাস যদি থাকে তাহলে সঙ্গে সঙ্গে কিন্তু জ্বর আসবে না বা ধরা পড়বে না বা উপসর্গ হবে না। ১৪ দিন পর্যন্ত এটার উপসর্গ হাইড থাকতে পারে। যখন তিনি দেশে এসেছেন তখন উপসর্গ ছিল না। এটা চিহ্নিত করার ব্যবস্থা নেই। এমনকি স্ক্যানিংয়ে জ্বর ধরা পড়বে না এবং রক্ত পরীক্ষা করলেও নেগেটিভ ফল আসবে।
‘আমরা তাদের একটা লোকেটর ফরম দিয়েছি। সেই ফরমে লিখে দেওয়া হয়েছে কোথায় ও কীভাবে থাকবে। আর যদি কোনো উপসর্গ দেখা দেয় তাহলে সে যোগাযোগ করবে, আমরাও মোবাইল ট্রাকিং করি কারা কোন দেশ থেকে আসলো, কোথায় আছে। তারাও যোগাযোগ করে হটলাইনে যে আমার তো জ্বর এসেছে, কাশি হয়েছে। এভাবে আমারা ১০০ জনের মতো লোককে এভাবে টেস্ট করেছি। তারমধ্যে এই দু’জনের যারা বিদেশ থেকে এসেছেন তাদের শরীরে ধরা পড়েছে।’
এই ভাইরাস আরো ছড়ানোর আশঙ্কা আছে কিনা- জানতে চাইলে সচিব বলেন, অবশ্যই আছে। আমরা সেই আশঙ্কা নিরোধের জন্য ব্যবস্থা করেছি।
‘আমরা কনট্রাক্ট ট্র্যাকিং করি- তারা কার সঙ্গে মিশেছে, কোথায় গেছে, কোন বাজারে গেছে, কোন বাজারে চা খেয়েছে, কাদের সঙ্গে বসেছে- সবকিছু করে আমরা প্রথমজনের জন্য ৪০ জনকে ট্র্যাক করেছি। তাদের কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করেছি। আমরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রোটোকল অনুযায়ী ব্যবস্থা করছি।’
আক্রান্ত দু’জনের জন্য মোট কতজনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে- জানতে চাইলে সচিব বলেন, এটার কোনো গড় অংক নেই। কার সঙ্গে মিশেছেন, কতটুকু কন্ট্রাক্ট হয়েছে- এরকমভাবে স্থানীয় পর্যায়ে তাদের অবজারভেশনে রাখা হয়েছি। সঠিক সংখ্যা বলা যাবে না। আমরা যত কন্ট্রাক্ট চিহ্নিত করেছি সবাইকে বিভিন্নভাবে কোয়ারেন্টাইনে রেখেছি।
ওই তিনজনের পর আর আক্রান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম।
স্বাস্থ্যসচিব বলেন, যে সব দেশে বেশি আক্রান্ত সে সব দেশ থেকে যেন কম আসে এবং না যায় সেখানে না যেতে পরামর্শ দিয়েছিলাম। দক্ষিণ কোরিয়া, চীনে অন-অ্যারাইভাল ভিসা বন্ধের পরামর্শ দিয়েছি।
এখনও আসা বন্ধ হচ্ছে না- এ বিষয়ে সচিব বলেন, যারা বিদেশে আছেন তারা আপাতত সেখানে থাক। কিন্তু আমরা তো ফোর্স করতে পারবো না।
ওই দু’জন কোন প্লেনে এসেছে সে বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে রিপোর্ট করা হবে বলে জানান সচিব।