করোনায় মৃত্যু ৫ হাজার ছাড়িয়েছে
- মাত্র চার দিনে এক হাজার মানুষের মৃত্যু
- বিশ্বের ১২৩টি দেশ ও অঞ্চল আক্রান্ত
- এবার আক্রান্ত কানাডার প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী
- মশকরার পর আক্রান্ত ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
ইউরোপ ও আমেরিকায় নভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপ দ্রæত বাড়তে থাকায় মাত্র চার দিনে আরও এক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে, বিশ্বে মৃতের সংখ্যা ৫ হাজার ১১১ জনে। আড়াই মাসে মহামারীর আকার পাওয়া নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বিশ্বের ১২৩টি দেশ ও অঞ্চলে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৩২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ কড়াকড়ি আরোপ করতে থাকায় দারুণভাবে বিঘিœত হচ্ছে বিশ্ব যোগাযোগ। একের পর এক আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আয়োজন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা আসছে নানা দেশ থেকে। কোথাও কোথাও খেলা চলছে গ্যালারি শূন্য রেখে।
বেলজিয়াম, ফ্রান্স, পতুগালস, শ্রীলঙ্কাহ আরও কয়েকটি দেশ স্কুল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে। জমায়ত ও জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে বিভিন্ন শহরে। ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে তিন দিন ধরে কার্যত অবরুদ্ধ দশায় থাকা ইতালিতে বৃহস্পতিবার দেড় হাজার নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। ইউরোপে করোনাভাইরাস প্রদুর্ভাগের অন্যতম কেন্দ্র হয়ে ওঠা এই দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে হাজার ছাড়িয়েছে। যানবাহন চলাচলে কড়াকড়ি আরোপের মাধ্যমে ফিলিপিন্সের রাজধানী ম্যানিলাকে এক মাস বাইরের দুনিয়া থেকে আলাদা করে ফেলার ব্যবস্থা হয়েছে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্্রুডোর স্ত্রী সোফি গ্রেগরি ট্্রুডো যুক্তরাজ্য থেকে ঘুরে এসে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ট্্রুডোর মধ্যে এখনও কোনো উপসর্গ দেখা না গেলেও চিকিৎসকের পরামর্শে তিনিও ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন।
আক্রান্ত হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার ডাটনও, যিনি গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে অনেকের সঙ্গে দেখা করেছেন; যাদের মধ্যে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের মেয়ে ইভাঙ্কা ট্রাম্পও আছেন। ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতের্তের পর ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারোও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর আগে তিনি করোনা ভাইরাসকে স¤প্রতি ‘ফ্যান্টাসি’ বলে মশকরা করেছিলেন। ভেবেছিলেন কী আর হবে।
করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা নিয়ে জটিলতায় থাকা যুক্তরাষ্ট্রের আরও কয়েকটি স্টেটে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। স্কুল বন্ধ রাখার পাশাপাশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বাসা থেকে কাজ করতে বলা হচ্ছে। কোথাও কোথাও নিত্যপণ্যের দোকানে জরুরি জিনিসপত্র পাওয়া যাচ্ছে না। আতঙ্কের মধ্যে জনজীবন অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার বিকেল (ইউরোপীয় সেন্ট্রাল টাইম) পর্যন্ত বিশ্বে এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৭ জন। আর মৃত্যু হয়েছে ৫ হাজার ১১১ জনের। আক্রান্তদের মধ্যে ৬৮ হাজার মানুষ ইতোমধ্যে সেরেও উঠেছেন বলে তথ্য দিয়েছেন জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।
আক্রান্ত ও মৃত্যুর অধিকাংশ ঘটনা ঘটেছে চীনে, তবে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার দেশটি নানা ধরনের কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে পরিস্থিতি সামলে ওঠার পর এখন সংক্রমণ বাড়ছে ইউরোপ, আমেরিকায়। ডিসেম্বরের শেষে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রথম ঘটনা ধরা পড়ে। সেই হুবেই প্রদেশে নতুন রোগীর সংখ্যা বৃহস্পতিবার নেমে এসেছে ৬ জনে। চীনের মূলভূখÐে বুধবার নতুন করে ৩৩ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে, মারা গেছেন ৭ জন।