করোনার ভ্যারিয়েন্ট যত শক্তিশালী, টিকা বিক্রির মুনাফাও তত বেশি
লাখ লাখ মানুষকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনা এবং জীবনযাপন স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরিয়ে আনার জন্য করোনার টিকা উন্নয়ন ও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো নিশ্চিতভাবেই প্রশংসার দাবিদার। তবে এই টিকা তারা বিনামূল্যে দিচ্ছে না। টিকা বিক্রি করে হাজার হাজার কোটি ডলার কামিয়ে নিচ্ছে ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিগুলো। এর মধ্যে করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বাড়ায় বুস্টার হিসেবে তৃতীয় ডোজ টিকা বিক্রি চেষ্টার মাধ্যমে লাভের অংক বড় হচ্ছে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর।
জুনে বিশ্লেষকরা জানিয়েছিলেন, তাদের ধারণা অনুযায়ী, চলতি বছর বিশ্বে টিকার বাজার হবে সাত হাজার কোটি ডলারের। তবে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণে বুস্টার ডোজের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বিতর্কের মধ্যে আছেন বিজ্ঞানীরা। বুস্টার ডোজের ব্যাপারে তারা ঐক্যমতে পৌঁছলে টিকার বাজারে হয়তো যুক্ত হবে আরও শত শত কোটি ডলার।
টিকা উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সহায়তাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান মডার্না গত মে মাসে জানিয়েছিল, চলতি বছর টিকা থেকে তাদের এক হাজার ৯২০ কোটি ডলারের আয় হতে পারে। বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানটি তাদের দ্বিতীয় প্রান্তিকের আয়ের বিবরণ প্রকাশ করবে। ধারণা করা হচ্ছে, সেটি প্রকাশ পেলে তাদের চলতি বছরের আয়ের পরিমাণ আরও বাড়ার পূর্বাভাস দেওয়া যাবে।
বিশ্বে টিকা বিক্রির মুনাফার সিংহভাগ যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের আরেক প্রতিষ্ঠান ফাইজারের পকেটে। ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে দুই ডোজ টিকা ৩০ ডলারে বিক্রি করছে প্রতিষ্ঠানটি। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে টিকা বিক্রি করে এক হাজার ১৩০ কোটি ডলার আয় করেছে প্রতিষ্ঠানটি। চলতি বছর ফাইজার দুই হাজার ৬০০ কোটি ডলার আয় করতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। তবে গত সপ্তাহে জানানো হয়েছে, তাদের আয় বেড়ে তিন হাজার ৩৫০ কোটি ডলার হতে পারে।
ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে টিকার কার্যকারিতার পরীক্ষা শুরু করেছে মডার্না ও ফাইজার। চলতি মাসেই এর ট্রায়াল শুরু হবে। এতে সফল হলে স্বাভাবিকভাবে দুই প্রতিষ্ঠানের টিকার চাহিদা আরও বাড়বে।
অবশ্য বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, অনেক দেশ এখন কম দামী টিকার দিকে ঝুঁকছে। সেই হিসেবে হয়তো লাভের অংক কমে আসবে মডার্না ও ফাইজারের মতো বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর। তবে বুস্টার ডোজ অনুমোদন পেলে আবারও স্বল্প মেয়াদে বাড়বে তাদের মুনাফার পরিমাণ।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান মর্নিংস্টারের বিশ্লেষক ড্যামিয়েন কনোভার বলেন, ‘দীর্ঘ মেয়াদে আমরা আশা করছি, শুধু বয়স্ক ও দুর্বল ইমিউন ব্যবস্থার মানুষদের জন্য বুস্টার ডোজের প্রয়োজনীয়তার আলোকে বছরে ২০০ কোটি ডলারের টিকা বিক্রি হতে পারে। যদি বুস্টার ডোজের চাহিদা বাড়ে কিংবা বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্টের জন্য নতুন টিকা আসে তাহলে সম্ভাব্য মুনাফার গতি ঊর্ধ্বমুখী হবে।’