করোনাভাইরাস: ১০ দিনে বানানো হাসপাতাল চালু হচ্ছে চীনে
চীনে নভেল করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করতে প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্রস্থল হুবেই প্রদেশের উহানে মাত্র ১০ দিনে তৈরি করা হাজার শয্যার হাসপাতালটি চালু হচ্ছে।
রোববার এই হুওশেনশান (অগ্নিদেবতা পবর্ত) হাসপাতাল নির্মাণ সম্পন্ন হয়, সোমবার থেকে এক হাজার শয্যার হাসপাতালটিতে কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছে চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া।
এই হাসপাতালে নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণে আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়া হবে। চীনের সশস্ত্র বাহিনীর এক হাজার ৪০০ মেডিকেল কর্মী হাসপাতালটিতে কাজ করবে। হাসপাতাল চালু হওয়ার আগেই তাদের উহানে পাঠানো হয়েছিল।
এই মেডিকেল কর্মীদের মধ্যে ৯৫০ জন চীনের গণমুক্তি ফৌজের (পিএলএ) জয়েন্ট লজিস্টিক সার্পোট ফোর্সের বিভিন্ন হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত ছিল। বাকী ৪৫০ জনকে পিএলএ-র সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে নিয়ে আসা হয়েছে।
২০০৩ সালে প্রাণঘাতী সার্সের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য বেইজিংয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে একটি অস্থায়ী হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছিল। ওই হাসপাতালের আদলেই উহানের এ হুওশেনশান হাসপাতালটি তৈরি করা হয়েছে।
২৩ জানুয়ারি থেকে এ হাসপাতালটির নির্মাণ করা শুরু হয়ে ১ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়।
এই সময়ের মধ্যে উহানে ভাইরাস সংক্রমণে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৯৫ থেকে ৪১০৯ জনে দাঁড়ায়। এতে উহানের হাসপাতালগুলোতে প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হয়। হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় শয্য না থাকায় অনেক রোগীকে বাসায় রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এসব পরিস্থিতি ঠিকমতো মোকাবিলা করা না গেলে প্রাদুর্ভাব আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা ছিল।
“এ ধরনের একটি প্রকল্পের জন্য এমনিতে অন্তত দুই বছর সময় লাগে। এক মাসে অস্থায়ী একটি ভবন বানানো যায়, কিন্তু সংক্রামক একটি রোগের জন্য নতুন হাসপাতাল বাননো এক রকম অসম্ভবই ছিল,” বলেন প্রকল্প ব্যবস্থাপক ফ্যাং শিয়াং।
উহানের দক্ষিণপশ্চিম প্রান্তে ঝিয়িন হ্রদের কাছে একটি স্বাস্থ্যনিবাসে হাসপাতালটি তৈরি করা হয়েছে। এলাকাটি উহানের কেন্দ্রস্থল থেকে অনেকটা দূরে। হাসপাতাল কমপ্লেক্সে বেশ কয়েকটি ডাইনিং হল ও ডর্মেটরিও তৈরি করা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ হাসপাতালের নকশা করতে পাঁচ ঘণ্টা সময় ব্যয় করে ও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নকশার ড্রাফট তৈরি করে। চীনের তিনটি নির্মাণ কোম্পানি যৌথভাবে হুওশেনশান হাসপাতালটি তৈরি করেছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিসিটিভি নতুন হাসপাতাল নির্মাণের কাজ সরাসরি সম্প্রচার করে। চার কোটিরও বেশি লোক সরাসরি সম্প্রচারে হাসপাতার নির্মাণ কাজ প্রত্যক্ষ করেছে বলে গ্লোবাল টাইমস সংবাদপত্র জানিয়েছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের সঙ্গে লড়াই করতে উহানে লিশেনশান নামে আরেকটি হাসপাতালও তৈরি করা হচ্ছে। লিশেনশান হাসপাতালের নির্মাণ কাজ বুধবার শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।