করোনাভাইরাস: সাফারি পার্কে কমেছে দর্শনার্থী আনাগোনা
করোনাভাইরাসের আতঙ্কে মধ্যে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে দর্শনার্থীদের আনাগোনা কমে গেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তবিবুর রহমান জানান, দেশের সবচেয়ে বড় এই বিনোদন কেন্দ্র করোনাভাইরাস আতঙ্কে এখন ফাঁকা। পার্কের বিভিন্ন ইভেন্টে দায়িত্বপ্রাপ্তদের এখন দিনের অধিকাংশ সময় অলস সময় কাটাতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, “বছরের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, ও মার্চ মাসে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষা সফরে এই পার্কে আসে। করোনাভাইরাস আতঙ্কেই এবার পরিস্থিতি ভিন্ন।
বিশেষ করে মার্চের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত পরিস্থিতি ঠিক থাকলেও দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে দর্শনার্থীর আগমন বন্ধ হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে পার্কে। সাধারণ মানুষ জনসমাগম স্থানগুলো এড়িয়ে চলার কারণে হয়ত দশনার্থীর সংখ্যা এভাবে কমছে।”
চলতি বছর প্রায় তিন কোটি টাকায় সাফারি পার্কের প্রধান ফটক ইজারা নেওয়া নাহিদা ‘অ্যাডভারটাইজিং অ্যান্ড প্রিন্টিং’- এর মালিক নাহিদা ইসলাম বলেন, “গত কয়েক মাস টিকেট বিক্রি বাবদ লাখ টাকা ছাড়িয়ে যেত। গত এক সপ্তাহ ধরে টিকেট বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা।“
পার্কের সবচেয়ে বড় ইভেন্ট কোরসাফারি পার্ক। এখানে পাঁচটি সাফারি বাস দর্শনার্থীদের পরিবহনে নিয়োজিত রয়েছে। অধিকাংশ সময় এই বাসে উঠতে দর্শনার্থীদের দীর্ঘ লাইন থাকে কিন্তু এখন দর্শনার্থী কম হওয়ায় চারটি বাস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
কোর সাফারি ইজারা নেওয়া প্রতিষ্ঠান ‘বাংলাদেশ অ্যাডভেঞ্চারের’ ব্যবস্থাপক মুকুল মিয়া বলেন, “এ সময় দেশের বিভিন্ন স্থানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা সফর, কারখানাসহ নানা সংগঠনের বিভিন্ন মিলন মেলায় মুখরিত থাকে সাফারি পার্ক। করোনা আতঙ্কে জনসমাগম না করতে নির্দেশ দেওয়ায় পার্কে দর্শনার্থীর সংখ্যা কমে গেছে। দর্শনার্থীর অভাবে অলস সময় কাটছে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের ইজারার টাকাও উঠাতে পারব না।”
পার্কের ওয়াইল্ড লাইফ সুপারভাইজার আনিসুর রহমান বলেন, “প্রতিবছর এমন সময় পার্কে ব্যাপক জনসমাগম হলেও এবার তা নেই। করোনাভাইরাস আতঙ্কে এখন পার্কে দর্শনার্থী নেই বললেই চলে। পার্ক ও এর আশপাশ এলাকা এখন প্রায় জনশূণ্য।”
সাফারি পার্কে কথা হয় ময়মনসিংহ থেকে আসা ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদ সঙ্গে। তিনি বললেন, “পার্কে তেমন ভিড় নেই। স্বাচ্ছন্দে সব ইভেন্ট উপভোগ করতে পেরেছি। করোনা ভাইরাস নিয়ে আমাদের এলাকায় আতঙ্কিত হওয়ার মত এখনও কোন ঘটানা ঘটেনি। তাই আমি আমার দুই সন্তান নিয়ে পার্কে বেড়াতে এসেছি।”
সাফারি পার্কের পরিসংখ্যান অনুযায়ী-২০১৯ সালের মার্চ মাসে দর্শনার্থী ছিল ২ লাখের বেশি। কিন্তু ২০২০ সালের মার্চ মাসের মাঝামাঝিতে পর্যন্ত দর্শনার্থীর সংখ্যা ২০ হাজার অতিক্রম করেনি।