করোনাভাইরাস: সচিবালয়ে প্রবেশে কড়াকড়ি
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
বাংলাদেশে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী বাড়তে থাকায় প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু সচিবালয়ে দর্শনার্থী প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করেছে সরকার। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া দর্শনার্থীদের পাস না দিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে আদেশ জারি করা হয়েছে।
সেখানে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পরিপ্রেক্ষিতে সতর্কতা অবলম্বন এবং সম্ভাব্য স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়ানোর লক্ষ্যে একান্ত অপরিহার্য না হলে বাংলাদেশ সচিবালয়ে দৈনিক দর্শনার্থী পাস ইস্যু না করার জন্য সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়ার জন্য আর্দিষ্ট হয়ে অনুরোধ করা হল।
যুগ্ম-সচিব, অতিরিক্ত সচিব, সচিবরে একান্ত সচিব এবং মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের একান্ত সচিবরা সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের দিন বাদে অন্য কার্যদিবসে পাঁচটি করে পাস ইস্যু করতে পারেন।
আগে এসব কর্মকর্তারা দিনে ১০টি করে পাস ইস্যু করতে পারলেও সচিবালয়ের নিরাপত্তা ঝুঁকি এবং কর্মপরিবেশ যেন নষ্ট না হয়- তা বিবেচনায় নিয়ে ২০১৫ সালের ২৪ নভেম্বর তা পাঁচটিতে নামিয়ে আনে সরকার।
গত রোববার থেকে সচিবালয়ের প্রবেশ ফটকে দর্শনার্থীদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে। যাদের তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি, তাদের সচিবালয়ে প্রবেশ করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে।
দর্শনার্থীদের প্রবেশ ফটকে তাপমাত্রা মাপার সঙ্গে যুক্ত সচিবালয় ক্লিনিকের একজন সেবিকা বুধবার বলেন, গত রোববার কাজ শুরু করার পর এ পর্যন্ত ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রার কাউকে তারা পাননি। ১০০ ডিগ্রির বেশি তাপমাত্রার কাউকে পাওয়া গেলে তাকে সচিবালয়ে প্রবেশের অনুমতি না দিয়ে দ্রæত হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে।
সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত দুইজন সেবিকা, একজন ডাক্তার এবং একজন স্যানিটারি ইন্সপেক্টর এই তাপমাত্রা পরিমাপের কাজে নিয়োজিত থাকেন বলে জানান ওই সেবিকা। পুলিশ সদস্যরা তাদের সহযোগিতা করছেন।
একজন কর্মকর্তা জানান, এমনিতে প্রতিদিন গড়ে দুই হাজারের বেশি দর্শনার্থী সচিবালয়ে প্রবেশ করেন। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর তা অর্ধেকে নেমে এসেছে। গত ৩ মার্চ পাস নিয়ে সচিবালয়ে প্রবেশ করেছিলেন ১ হাজার ৫২৫ জন দর্শনার্থী। গত ১৫ মার্চ এই সংখ্যা কমে ১ হাজার ১৭৯ জনে নেমে আসে।
বুধবার দর্শনার্থীর সংখ্যা আরও কমেছে জানিয়ে একজন কর্মকর্তা বলেন, একান্ত প্রয়োজন ছাড়া পাস ইস্যু করা হচ্ছে না। এছাড়া ইদানিং দর্শনার্থীও কম আসছেন। বুধবার বিকাল সাড়ে ৩টার পর পাস ইস্যুর সার্ভারে জটিলতা দেখা দিলে পুরো সিস্টেমই বন্ধ করে দেওয়া হয়। আগে অনলাইনের পাশাপাশি ম্যানুয়ালি কাগুজে পাস ইস্যু করা হলেও মাস তিনেক ধরে আর কাগুজে পাস দেওয়া হয় না।
সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকেই মাস্ক পরে দাপ্তরিক কাজ করছেন। বেশিরভাগ অফিসে হাত পরিষ্কার রাখার উপকরণ দেওয়া হয়েছে। সরকারের নির্দেশনা মেনে করমর্দন ও কোলাকুলি এড়িয়ে চলছেন সবাই।