করোনাভাইরাস: যুক্তরাষ্ট্রকে ব্যঙ্গ করে চীনের অ্যানিমেশন
প্রাণঘাতী নতুন করোনাভাইরাস মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকাণ্ডকে ব্যঙ্গ করে স্বল্পদৈর্ঘ্যের একটি অ্যানিমেশন বানিয়েছে চীন।
‘ওয়ান্স আপন এ ভাইরাস’ নামের ওই অ্যানিমেশনে লেগো-সদৃশ দুটি চরিত্র দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনকে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।
নতুন করোনাভাইরাসের উৎস নিয়ে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে তুমুল কথার লড়াই চলছে।
ডিসেম্বরের শেষদিকে চীনের উহানে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসটি আবির্ভূত হওয়ার পর মাত্র চারমাসেই এটি মহামারী আকারে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে; কেড়ে নিয়েছে প্রায় আড়াই লাখ মানুষের প্রাণ।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, উহানের ভাইরোলজি ল্যাবই যে ভাইরাসটির উৎস সে বিষয়ে তিনি ‘আত্মবিশ্বাসী’।
যদিও নিজের দাবির সপক্ষে কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেননি তিনি।
চীন শুরু থেকেই তাদের ল্যাব থেকে ভাইরাস ছড়ানোর অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়ায় প্রকাশিত ওই অ্যানিমেশনের শুরুতে লাল পর্দা সরে যাওয়া পর মঞ্চে মাস্কপরিহিত লেগো-সদৃশ চীনের টেরাকোটা যোদ্ধা ও যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যাচু অব লিবার্টির আবির্ভাব ঘটে।
“আমরা একটি নতুন ভাইরাস পেয়েছি,” বলে ওই টেরাকোটা যোদ্ধা।
“তো কী হয়েছে?” প্রত্যুত্তরে বলে স্ট্যাচু অব লিবার্টি।
“এটা বিপজ্জনক,” বলে ওই যোদ্ধা।
“এটা সামান্য ফ্লু,” উত্তর দেয় স্ট্যাচু অব লিবার্টি।
দুই চরিত্রের কথোপকথনে টেরাকোটা যোদ্ধা ভাইরাস নিয়ে বারবার সতর্ক ও প্রাদুর্ভাবের ক্ষয়ক্ষতি জানালেও স্ট্যাচু অব লিবার্টিকে সেগুলো অগ্রাহ্য করতে দেখা গেছে।
স্ট্যাচু অব লিবার্টির মুখ থেকে বের হওয়া সংলাপ যেন ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের প্রথম দিককার সংবাদ সম্মেলনগুলোতে ট্রাম্পের বলা বিভিন্ন কথারই প্রতিধ্বনি; সেসব সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট কোভিড-১৯ কে হালকা করে দেখেছিলেন বলে অভিযোগ আছে।
অ্যানিমেশনে কিছু সময় পর ভাইরাস সংক্রমণের চিহ্ন হিসেবে স্ট্যাচু অব লিবার্টির শরীর লাল হতে শুরু করে এবং চিকিৎসা সহায়তা স্ট্যান্ড ও মাস্ক যুক্ত হয়।
এসময় টেরাকোটা যোদ্ধা তাকে প্রশ্ন করে, “তুমি কি তোমার নিজের কথাই শুনছো?”
উত্তরে স্ট্যাচু অব লিবার্টি বলে, “আমরা সবসময় সঠিক, এমনকি যখন আমরা নিজেরাই নিজেদের বিরোধীতা করি, তখনও।”
“মার্কিনিদের এ বিষয়টি আমি পছন্দ করি, তোমাদের ধারাবাহিকতাকে,” পাল্টা জবাব টেরাকোটা যোদ্ধার।
যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ যখন চীনের বিরুদ্ধে নতুন করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা বিষয়ে বিশ্বকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগ এনেছে এবং ভাইরাসের উৎস নিয়ে আন্তর্জাতিক তদন্তের পক্ষে সমর্থন বাড়ছে, সেসময় চীন এ অ্যানিমেশনটি ছাড়ল।
গত সপ্তাহে রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প চীন তাকে ফের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ‘দেখতে চায় না’ বলেও মন্তব্য করেছিলেন।
“করোনাভাইরাস মোকাবেলায় চীনের নেওয়া পদক্ষেপই প্রমাণ করেছে, নভেম্বরের নির্বাচনে আমাকে হারাতে বেইজিং সম্ভাব্য সব কিছু করতে পারে,” বলেছিলেন তিনি।
সিনহুয়াতে প্রকাশিত অ্যানিমেশন প্রসঙ্গে শনিবার ইমেইলে দেওয়া এক বিবৃতিতে বিশ্বখ্যাত খেলনা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান লেগো’র সংবাদ কার্যালয় বলেছে, “ওই অ্যানিমেশনটি নির্মাণে আমরা কোনোভাবেই জড়িত ছিলাম না।”